নিজস্ব সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি ঃ- রাত ফুরলেই রবিবার জলপাইগুড়ি জেলার তিন পুরসভার (জলপাইগুড়ি, ময়নাগুড়ি ও মালবাজার) ৫৭টি ওয়ার্ডে ভোট গ্রহণ শুরু হবে। সমস্ত DCRC সেন্টারগুলিতে শনিবার চূড়ান্ত ব্যস্ততা দেখা গেল ভোট কর্মী ও প্রশাসনের। জলপাইগুড়ি জেলার তিনটি পুরসভায় ভোটপর্ব নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে সবরকম ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা প্রশাসন। ডিসিআরসি সেন্টার থেকে ভোটকর্মীদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জলপাইগুড়ি পুরসভার ২৫টি ওয়ার্ডের মোট ১১১টি বুথ ও ময়নাগুড়ি পুরসভার ১৭টি ওয়ার্ডের ৩২টি বুথে এবং মালবাজার পুরসভার ১৫টি ওয়ার্ডের ২৮টি বুথে ভোট গ্রহণ হবে৷ জলপাইগুড়ি পুরসভায় এবার মোট ভোটার ৮৯২১৮ জন, এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৪৩০১২ জন এবং মহিলা ভোটার ৪৬২০৬ জন। ময়নাগুড়ি পুরসভায় মোট ভোটার ২৪৪০৩ জন, এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১২০০১ জন, আর মহিলা ভোটার ১২৪০২ জন। মালবাজার পুরসভার মোট ভোটার ২১৮৯২ জন, এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১০৭৪৭ জন এবং মহিলা ভোটার ১১১৪৫ জন। আগামীকাল ২৭শে ফেব্রুয়ারি জলপাইগুড়ি পুরসভার মোট ৮২ জন, ময়নাগুড়ি পুরসভার ৫৭ জন এবং মালবাজার পুরসভার ৪৬ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ করবে সাধারণ ভোটাররা৷ গোটা জেলার তিনটি পুরসভায় মোট পুলিশ কর্মী মোতায়ন থাকবে প্রায় ১০০০ জন৷ প্রতি বুথে একজন পুলিশ অফিসার, দুইজন বন্দুকধারী পুলিশ কর্মী ও একজন লাঠিধারী পুলিশ কর্মী থাকবে৷ জেলায় কোথাও কোনো স্পর্শকাতর বুথ নেই বলে জানিয়েছেন জলপাইগুড়ির মিউনিসিপ্যাল রিটার্নিং অফিসার সুদীপ পাল। জলপাইগুড়ি ও ময়নাগুড়ির ভোট গননা হবে জলপাইগুড়ি প্রসন্নদেব মহিলা মহাবিদ্যালয়ে। অন্যদিকে মালবাজার পুরসভার ভোট গননা হবে মাল আদর্শ বিদ্যা ভবনে। তিনটি পুরসভায় তিনজন সাধারণ পর্যবেক্ষক থাকছে৷ পাশাপাশি জেলার জন্য একজন বিশেষ পর্যবেক্ষক থাকছে৷
দীর্ঘ সাত বছর পরে আগামীকাল রবিবার ১৮৮৫ সালে স্থাপিত রাজ্যের অন্যতম প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী জলপাইগুড়ি পুরসভা পরিচালনার জন্য সদস্য নির্বাচন হতে যাচ্ছে। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত এই লাল বাড়ির দখল কোন রাজনৈতিক দলের হাতে আগামী পাঁচ বছরের জন্য যাবে, তা রবিবার ঠিক করবে এই শহরের গণদেবতারা।
শনিবার সকাল থেকেই শহরের প্রসন্ন দেব মহিলা মহাবিদ্যালয়ের অস্থায়ী নির্বাচন পরিচালনা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেল ভোট কর্মীরা যাবতীয় সরঞ্জাম বুঝে নিয়ে রওনা হচ্ছেন বিভিন্ন ভোট গ্রহণ কেন্ডের উদ্দেশ্যে। করোনা বিধি মেনে ভোটের সামগ্রীর সঙ্গে জীবাণু মুক্ত করার সামগ্রীও হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে ভোট কর্মীদের। পাশাপাশি এই অস্থায়ী নির্বাচন কার্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও যথেষ্ট আঁটোসাঁটো করেছে জেলা নির্বাচন কমিশন।
এক ভোট কর্মী জানালেন, সবই সুষ্ঠ ভাবেই চলছে। কোন সমস্যা নেই। খুব ভালো ব্যবস্থা করা হয়েছে। বুথে ভোটকর্মীদের নিয়ে যাওয়ার জন্য জলপাইগুড়িতে ছোট বড় মিলিয়ে মোট ১৭১টি গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রত্যেক বুথ পার্টিদের জন্য আলাদা আলাদা গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জলপাইগুড়ি সদর মহকুমা শাসক সুদীপ পাল জানান, প্রতিটি বুথে চারজন করে ভোটকর্মী থাকবেন। এছাড়া রিজার্ভ হিসেবে থাকবেন ২০ শতাংশ অতিরিক্ত ভোটকর্মী।