সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি, ৩০ অক্টোবর : সদ্যোজাত শিশু কোলে নিয়ে কেউ দাঁড়িয়ে রয়েছেন দুপুর ১২ টা থেকে আবার কেউবা ১ টা থেকে। সাড়া দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেলেও মেলেনি ১০২ নম্বরের সরকারি পরিষেবাযুক্ত অ্যাম্বুলেন্স বলে দাবি প্রসূতিসহ তাদের পরিজনদের। এই ঘটনা ঘটেছে আজ রবিবার জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের মাতৃমায়ে। এম্বুলেন্স না পাওয়ায় রীতিমতো দুশ্চিন্তা ও ভোগান্তিতে পড়েন শিশু কোলে মা সহ সংশ্লিষ্ট পরিবারের সদস্যরা। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, দীর্ঘক্ষণ তারা দাঁড়িয়ে আছেন। কিন্তু ১০২ নম্বরে অ্যাম্বুলেন্সে ফোন করা করলেও সেই ফোন তোলা হচ্ছে না। যদিও কখনো তোলা হচ্ছে কিন্তু দূরে যাওয়ার কথা শুনেই তারা যেতে অস্বীকার করছেন। আর এই কারণেই বেজায় সমস্যায় পড়েন শিশু কোলে মা সহ তাদের পরিবার পরিজনেরা।

বানারহাট ব্লকের সাঁকোয়াছড়া ১ এর উত্তর ডাঙ্গাপাড়া এলাকার বিশ্বজিৎ রায় বলেন, তার স্ত্রীর আজই ছুটি হয়েছে। কন্যা নিয়ে বাড়ি যাওয়ার কথা। কিন্তু তিন ঘন্টা ধরে দাঁড়িয়ে রয়েছি। কোন ১০২ নম্বর এম্বুলেন্সের কোন পরিষেবা মিলছে না। ১০২ নম্বর এম্বুলেন্স চালকরা বলছেন তাদের গাড়ি নেই। বিশ্বজিৎ বাবু আরো বলেন, আমি দেখছি জলপাইগুড়ির লোকাল যারা আছে তাদের ১০২ নম্বর এম্বুলেন্স নিয়ে যাচ্ছে। আমার বাড়ি যেহেতু অনেক দূরে তাই ওদের পোষাবে না বলে নিতে চাচ্ছে না এমন কথাও বলেছে আমাকে।

বিশ্বজিৎ রায়
পাশাপাশি হাসপাতালের মাতৃমা বিভাগে দুটি বেডকে একত্র করে তাতে গাদাগাদি করে চারজন শিশু ও মায়েদের একসাথে জায়গায় রাখা হয়েছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই সকলের সমস্যা হচ্ছে বলে তিনি জানান। সেইসাথে তিনি বলেন, সদর হাসপাতালে এসেছিলাম ভালো পরিষেবা পাওয়া যাবে বলে। প্রসূতিদের গরম জলের ব্যবস্থাটুকুও নেই, গরমজল কেন পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। গরম জল কিনে নিতে হয় বাইরে থেকে।

রাজগঞ্জ ব্লকের সায়রা বানু সদ্যোজাত শিশু কোলে নিয়ে বসেছিলেন। তিনি বলেন দুপুর ১ টা থেকে বসে রয়েছি বাচ্চা নিয়ে। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেল, কিন্তু ১০২ এর গাড়ি পাইনি। খুব সমস্যায় রয়েছি বলে তিনি জানান।

ধুপগুড়ির দক্ষিণ ঝালদা থেকে এসেছিলেন প্রসূতি সহ পরিবার। দীর্ঘ কয়েক ঘন্টার অপেক্ষার পর মিলেছিল ১০২ এর অ্যাম্বুলেন্স। শিশু নিয়ে সমস্যার মধ্যে তাদের এই সময় কাটাতে হয়েছে বলে দাবি।

ময়নাগুড়ির ঝাজাঙ্গীর এলাকার ধরতি মোহন রায় বলেন, মেয়েকে নিয়ে এসেছিলাম। ছুটি হয়েছে। ১০২ নম্বরের গাড়ির সাথে যোগাযোগ করা হলেও গাড়ি মেলেনি। আড়াই ঘন্টা এভাবেই অপেক্ষা করতে হয়েছে বলে বক্তব্য তার।

১০২ অ্যাম্বুলেন্সের এক চালক বাসুদেব বর্মন বলেন, মাত্র ছ’টি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে তাদের। বেশিরভাগ অ্যাম্বুলেন্সগুলো পেশেন্ট নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় গেছে। তাই আসতে দেরি হচ্ছে। কিন্তু যে সকল অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে করা হচ্ছে তা ভিত্তিহীন বলে তিনি জানান।
আজ সাংবাদিকরা হাসপাতাল এলাকায় পৌঁছতেই সন্ধ্যার আগে একে একে ১০২ নম্বরের অ্যাম্বুলেন্স মাতৃমায়ে আসতে দেখা যায়।