জলপাইগুড়ি : জলপাইগুড়ির মোহিতনগর এলাকায় ঘটল হৃদয়বিদারক ও চাঞ্চল্যকর ঘটনা। প্রতিশোধের আগুনে পুড়ে এক ব্যক্তি এমন এক অমানবিক পথ বেছে নিলেন, যা এলাকায় আতঙ্ক ও ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। অভিযোগ, দুলাল দাস নামের এক চা–শ্রমিক তাঁর ছাগলকে রাস্তার একটি কুকুর কামড়ে মারার প্রতিশোধ নিতে মৃত ছাগলের মাংসে কীটনাশক মিশিয়ে এলাকাজুড়ে ফেলে দেন। সেই বিষমিশ্রিত মাংস খেয়ে মৃত্যু হয় অন্তত ১২টি পথকুকুরের, আরও কয়েকটি কুকুর আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন।

ঘটনাটি ঘটে গত ৯ই আগস্ট ঘোগি পাড়া, গৌরীহাট ও মহিতনগর এলাকায়। অভিযোগ, ছাগলটি মারা যাওয়ার পর অভিযুক্ত পরিকল্পিতভাবে মৃতদেহ কেটে বিষ মিশিয়ে ‘ফাঁদ’ পাতেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ঘটনার পর দুলাল দাস নিজেই কয়েকজনের সামনে কুকুর হত্যা করার কথা স্বীকার করেন। বর্তমানে অভিযোগ দায়ের হতেই তিনি পলাতক, পুলিশ তার খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে।
পশু কল্যাণ ও অধিকারের জন্য কাজ করা সংস্থা SPOAR ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃত কুকুরগুলির কবর দেওয়া, আহতদের উদ্ধার ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। SPOAR–এর সম্পাদক অরকপ্রভ মজুমদার ও নির্বাহী সদস্য আকাশ সরকার জানান, তারা কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এফআইআর–এ পশুদের প্রতি নিষ্ঠুরতা প্রতিরোধ আইন, ১৯৬০–এর ধারা ১১(১)(a) ও ১১(১)(l), এবং ভারতীয় দণ্ডবিধি–র ধারা ৪২৯, ২৭৩ ও ১২০বি–তে মামলা রেজিস্ট্রেশনের দাবি জানানো হয়েছে।
SPOAR পুলিশের কাছে আরও দাবি জানিয়েছে – অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে। ঘটনাস্থলে থাকা মৃতদেহগুলির ময়নাতদন্ত করতে হবে। বিষমেশানো মাংস জব্দ করে ফরেনসিক পরীক্ষায় পাঠাতে হবে। কঠোর শাস্তি দিয়ে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা রোধ করতে হবে।
সংস্থাটি সাধারণ মানুষকে আহ্বান জানিয়েছে, পশুর প্রতি নিষ্ঠুরতার ঘটনা দেখলে সঙ্গে সঙ্গে নিকটবর্তী থানায় অথবা পশু কল্যাণ সংস্থাকে জানান।

এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। প্রশ্ন উঠছে—প্রতিশোধের নেশা কি এতটাই অমানবিক হতে পারে, যাতে নিরপরাধ প্রাণও রক্ষা পায় না? মোহিতনগর এখন শোক, আতঙ্ক ও ন্যায়বিচারের দাবিতে উত্তাল।