নিজস্ব প্রতিনিধি, রাজগঞ্জ, জলপাইগুড়ি : একটা পুণ্যস্নানের সকাল। আশপাশে গুনগুন করে চলছিল মন্ত্র, ধূপকাঠির ধোঁয়ার সঙ্গে মিশে গিয়েছিল মানুষের প্রার্থনা। ঠিক তখনই কুন্দরদীঘির পুকুরে নেমে নিঃশব্দে তলিয়ে গেল এক কিশোর। আর ফিরল না বাপি রায়।

১৪ বছরের সেই প্রাণবন্ত ছেলেটি ছিল আমবাড়ির চিন্তামোহন হাই স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র। মেলার প্রস্তুতির মধ্যেই স্নান করতে গিয়েছিল বন্ধুর সঙ্গে। কিন্তু আচমকা গভীর জলে তলিয়ে যাওয়ার পর আর কারও চোখে পড়েনি তাকে। বন্ধু ভয় পেয়ে সরাসরি ফিরে যায় বাড়িতে, কাউকে কিছু না জানিয়ে।

যখন পরিবার ও প্রতিবেশীরা খবর পেয়ে ছুটে যান, তখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। পুকুর থেকে উদ্ধার হয় বাপির নিথর দেহ। প্রথমে ফুলবাড়ির এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, পরে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে। চিকিৎসকেরা জানান, আর কোনও কিছুই করার নেই।

এই আকস্মিক মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ আমবাড়ি ও শিকারপুর। যেখানে মেলা আর পুণ্যস্নানের আনন্দ হওয়ার কথা ছিল, সেখানে ছড়িয়ে পড়েছে কান্নার রোল। একদিন আগেও যে কিশোর বন্ধুদের সঙ্গে হাসছিল, খেলছিল, সে আজ নেই।
স্থানীয় এক প্রবীণ বললেন, “এমন দুর্ঘটনা হৃদয় ভেঙে দেয়। এই বয়সে কারও চলে যাওয়া মানা যায় না। ঈশ্বর ওর পরিবারকে শক্তি দিন।”
এ ঘটনা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল- উৎসব হোক বা আচার, সুরক্ষা ব্যবস্থা থাকা কতটা জরুরি। একটুখানি সাবধানতা হয়তো বাঁচাতে পারত এক তরতাজা জীবন।
বাপির অকালমৃত্যু শুধু একটা পরিবার নয়, কাঁদিয়ে গেল গোটা অঞ্চলকে।