পূর্ব মেদিনীপুর : মাধ্যমিকের পর শুরু হয়েছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। অথচ সরকারি প্রকল্প ‘তরুণের স্বপ্ন’-এর মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা করে ট্যাব কেনার অনুদান পেয়েও পূর্ব মেদিনীপুরে প্রায় ২০০০ পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় বসল না।
জেলা শিক্ষা দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ৩২,২৪৮ জন ছাত্রছাত্রী এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছিল। কিন্তু এদের মধ্যে ২০০০ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়নি।
কেন পরীক্ষা দিল না এত সংখ্যক ছাত্রছাত্রী?
তদন্তে উঠে এসেছে কয়েকটি সম্ভাব্য কারণ—
অর্থনৈতিক চাপ: পরিবারের আর্থিক অনটনের কারণে অনেক ছাত্র ভিন রাজ্যে কাজ করতে চলে গেছে।
বাল্যবিবাহের করাল গ্রাস: কন্যাশ্রী, রূপশ্রী প্রকল্পের সুবিধা পেলেও বহু ছাত্রী অল্প বয়সেই বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সচেতনতার অভাব: স্কুল শিক্ষকদের মতে, অনেক ছাত্রছাত্রী ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে এখনও যথেষ্ট সচেতন নয়।
কুলবেড়িয়া ভীমদেব আদর্শ বিদ্যাপীঠের ৩০৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২৮৮ জন পরীক্ষা দিয়েছে। বহিচবেড়িয়া হাইস্কুলে ৬৩ জনের মধ্যে পরীক্ষায় বসেছে ৫৯ জন।
স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা মনে করছেন, শিক্ষার পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরি। কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, সবুজ সাথী প্রকল্প চালু থাকলেও ছাত্রীরা পালিয়ে বিয়ে করছে, আর ছাত্ররা অভাবের তাড়নায় কাজের খোঁজে রাজ্য ছাড়ছে।
জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ অপর্ণা ভট্টাচার্য জানান, “এই মুহূর্তে সঠিক কারণ বলা কঠিন, তবে সরকার বিষয়টি তদন্ত করবে।”
বিজেপির তরফ থেকে একে রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা এবং উপযুক্ত তদন্তের দাবী জানিয়েছে।
সরকার পড়াশোনার সুযোগ তৈরি করছে, কিন্তু বাস্তবে তা কতটা কাজে লাগছে? তাহলে কি ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পের উদ্দেশ্য বিফল? নাকি প্রয়োজন আরও কার্যকর সচেতনতার প্রচার? পরীক্ষার আসনে অনুপস্থিত ২০০০ শিক্ষার্থীর গল্প যেন এক গভীর প্রশ্ন তুলে দেয়!