ডিজিটাল ডেস্ক : আজ শুক্রবার ২০২৩ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ হল। এবছর ৭৬ দিনের মাথায় ফল প্রকাশ করলো পর্ষদ৷ পাশ করেছে ৫ লক্ষ ৬৫ হাজার ৪২৮ জন। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় একথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, পরীক্ষায় এবছর মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৬ লক্ষ ৯৭ হাজার ২১২ জন। এর মধ্যে ছাত্রের সংখ্যা ৩ লক্ষ ৬২ হাজার এবং ছাত্রীর সংখ্যা ছিল ৩ লক্ষ ৭৬ হাজার ৬৮ জন।চলতি বছর মাধ্যমিকে পাশের হার ৮৬.১৫ শতাংশ। গতবার পাশের হার ছিল ৮৬.৬০ শতাংশ।
পাশের হারে শীর্ষে ফের পূর্ব মেদিনীপুর জেলাভিত্তিক পাশের হারের নিরিখে শীর্ষে রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর। দ্বিতীয় স্থানে কালিম্পং। তৃতীয় স্থানে রয়েছে কলকাতা। পশ্চিম মেদিনীপুর রয়েছে চতুর্থ স্থানে। ৯৬.৮১ শতাংশ পূর্ব মেদিনীপুর। কালিম্পং ৯৪.১৩ শতাংশ। কলকাতা ৯৩.৭৫ শতাংশ, পশ্চিম মেদিনীপুর ৯২.১৩ শতাংশ।

২০২৩-এর মাধ্যমিকের মার্কশিটে এসেছে অনেক বদল। মার্কশিটে রয়েছে ওভারঅল গ্রেড। মোট নম্বরের জেনারেল পারফর্ম্যান্স থাকছে। প্রত্যেক মার্কশিট ও সার্টিফিকেটে কিউআর কোড থাকছে।
এবছর মাধ্যমিকে প্রথম হলেন পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার দেবদত্তা মাজি। সে পেয়েছে ৬৯৭ নম্বর। সে কাটোয়ার দূর্গাদাসী চৌধুরানী গার্লস হাইস্কুল ছাত্রী বলে জানিয়েছেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়। শতকরা হারে দেবদত্তা পেয়েছে ৯৯.৫৭ শতাংশ। দ্বিতীয় হয়েছে বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুলের শুভম পাল। সে পেয়েছে ৬৯১ নম্বর (৯৮.৭১)। একই নম্বর পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছে মালদার রিফাত হাসান সরকার।

২০২৩-এর মাধ্যমিকে প্রথম ১০-এর মেধা তালিকায় রয়েছে ১৬ জেলার ১১৮ জন। মালদা (২১) থেকে সব থেকে বেশি সংখ্যক পড়ুয়া মেধাতালিকায় আছেন। পূর্ব বর্ধমান থেকে ১৭, বাঁকুড়াতে ১৪, দক্ষিণ ২৪ পরগনাতে ১৩, পূর্ব মেদিনীপুর ১১, উত্তর ২৪ পরগনায় ৯, পশ্চিম মেদিনীপুরে ৯, পুরুলিয়াতে ৬, হুগলিতে ৫, হাওড়ায় ৪, কোচবিহারে ৩, বীরভূমে ২, দক্ষিণ দিনাজপুর, ঝাড়গ্রাম, নদিয়া ও জলপাইগুড়ি থেকে এক জন করে রয়েছে মেধা তালিকায়। মাধ্যমিকের প্রথম ১০-এ নেই কলকাতা – বলে জানালেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়। এবারও মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় জেলার জয়জয়কার। মালদা থেকে সর্বাধিক ২১ জন প্রথম দশে স্থান পেয়েছেন। তালিকায় দ্বিতীয় পূর্ব বর্ধমান থেকে ১৭ জন দশে জায়গা পেয়েছেন।
তৃতীয় স্থানে আছে ৬ জন। অর্ক মণ্ডল তৃতীয় (৬৯০ নম্বর ৯৮.৫৭%)। টাকি রামকৃষ্ণ মিশন হাইস্কুল। উত্তর ২৪ পরগনা।। সৌম্যদীপ মল্লিক। বেড়াচাপা দেউলিয়া উচ্চবিদ্যালয়। উত্তর ২৪ পরগনা। মহম্মদ সরবর ইমতিয়াজ। রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দির মালদা।মাহির হোসেন। রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দির। মালদা। স্বরাজ পাল। রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দির। মালদা। অর্ঘদীপ সাহা। রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দির। মালদা।
মাধ্যমিকে চতুর্থ স্থানাধিকারী ৪ জন। প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৯। পেয়েছে ৯৮.৪৩ শতাংশ নম্বর। সমাদৃতা সেন। বনগাঁ কুমুদিনী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়। অনিশ বাড়ুই। নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন, দক্ষিণ ২৪ পরগনা। তুহিন বেরা। পূর্ব মেদিনীপুর। রঘুনাথবাড়ি রামতারক অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায়। বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুল।
পঞ্চম স্থানাধিকারীর প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৮। অরিজিৎ মণ্ডল। পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠ। শুভজিৎ দে। পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠ। সুপ্রভা আদক। সারদা বিদ্যামন্দির। পশ্চিম মেদিনীপুর। অন্বেষা চক্রবর্তী। বাঁকুড়া মিশন গার্লস হাইস্কুল। ইশান পাল। বিবেকানন্দ শিক্ষানিকেতন হাইস্কুল, বাঁকুড়া। রূপায়ন পাল। পূর্ব বর্ধমান। সিএমএস বর্ধমান ডেল স্কুল। অনুশ্রেয়া দাস। চঞ্চলরানি দ্রাক্ষায়ণী গার্লস হাইস্কুল। শুভজিৎ দেব। মালদা। এসি ইন্সটিটিউট।
মাধ্যমিকে ষষ্ঠ স্থানাধিকারী ১১ জন। অপূর্ব সামন্ত। বিবেকানন্দ শিক্ষানিকেতন হাইস্কুল, বাঁকুড়া। প্রাণীল যশ, বর্ধমান মিউনিসিপাল হাইস্কুল। সতীর্থ সাহা, দক্ষিণ দিনাজপুর, বালুরঘাট হাইস্কুল। রায়ান আবেদীন, মালদা রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দির। ঋদ্ধিশ দাস। মালদা রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দির। বিদিশা কুণ্ডু। বনগাঁ কুমুদিনী উচ্চবালিকা বিদ্যালয়। সুতীর্থ পাল। নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন। অনীক বাড়ুই। নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন। সৌম্যদীপ দাস। পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠ। সৌম্যদীপ নায়েক। পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠ। সুরদেন্দু মণ্ডল। বিবেকানন্দ শিক্ষানিকেতন হাইস্কুল বাঁকুড়া।
মাধ্যমিকে সপ্তম স্থানাধিকারীদের দেখে নিন। সপ্তম স্থানাধিকারীর প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৬ সুচেতনা রায়। বসিরহাট পূর্ণচন্দ্র মজুমদার গার্লস হাইস্কুল। অদ্রিজ গুপ্ত। নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন। অনুশ্মিতা সাঁতরা। বাগনান আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়। জিষ্ণু ঘোষ। মাহেশ শ্রীরামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ বিদ্যালয়। হুগলি।শুভম হাজরা। পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠ। দেবশঙ্কর সাঁতরা। সারদা বিদ্যামন্দির। মেদিনীপুর। স্মরণ দেবনাথ, ধুপগুড়ি বৈরাতিগুড়ি উচ্চ বিদ্যালয়, জলপাইগুড়ি।
মাধ্যমিকে প্রথম স্থানাধিকারী দেবদত্তা মাজি জানান, ‘ভবিষ্যতে ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই।’ পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া দূর্গাদাসী চৌধুরানি গার্লস হাইস্কুলের দেবদত্তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৯৭। ৯৯.৫৭ শতাংশ নম্বর পেয়েছে। তবে তার কথায় উঠে এল স্কুল বনাম প্রাইভেট টিউটর বিতর্ক। বলেন, ‘কোচিং সেন্টারে পড়তাম। স্কুলের শিক্ষকদের থেকে সাহায্য পেয়েছি।’
এবছর মাধ্যমিকে ১ লক্ষেরও বেশি পরীক্ষার্থী ফেল করেছে বলে আজ, শুক্রবার জানালেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে তিনি এও জানিয়েছেন যে মাধ্যমিকে অকৃতকার্য হওয়া মানেই সব শেষ হয়ে যাওয়া নয়। এখান থেকেও ঘুরে দাঁড়ানোর সম্পূর্ণ সুযোগ রয়েছে।
আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালের মাধ্যমিক শুরু হবে ২ ফেব্রুয়ারি। আজ, শুক্রবার এ বছরের পরীক্ষার ফলপ্রকাশের দিন রীতি মেনে আগামী বছরের এই বড় ঘোষণাটি করে দিলেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়। যদিও আগামী বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার সম্পূর্ণ রুটিন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখতে পারবেন। https://wbbse.wb.gov.in/-এ ওয়েবসাইটে যান।
মাধ্যমিক উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইট করে তিনি, ‘মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সকল ছাত্রছাত্রীদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। সাফল্যের সঙ্গে পূর্ণ হোক তোমাদের আগামীর প্রত্যেকটি দিন।’
মাধ্যমিক পরীক্ষার রুটিন ২০২৪
২ ফেব্রুয়ারি – প্রথম ভাষা বাংলা
৩ ফেব্রুয়ারি- দ্বিতীয় ভাষা
৫ ফেব্রুয়ারি- ইতিহাস
৬ ফেব্রুয়ারি- ভূগোল
৮ ফেব্রুয়ারি-অঙ্ক
৯ ফেব্রুয়ারি -জীবন বিজ্ঞান-
১০ ফেব্রুয়ারি-ভৌত বিজ্ঞান
১২ ফেব্রুয়ারি- ঐচ্ছিক বিষয়