আমিরুল ইসলাম, মালদা, ১০ অক্টোবর’২৩ : পণের দাবিতে গৃহবধূর হাত পা বেঁধে বিবস্ত্র করে নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উঠল স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে।এই হাড় হিম করা ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার মধ্য রাতে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার সাদলিচক গ্রাম পঞ্চায়েতের নতুন সাদলিচক- আড়োলপুর গ্রামে।সোমবার রাতে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই গৃহবধূর পরিবার।অভিযোগ উঠেছে স্বামী আবুজার হোসেন,শাশুড়ি নুরেফা বিবি ও দুই দেওর উমর ফারুক ও বাদিরুদ্দিন এর বিরুদ্ধে।ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছেন।পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, হরিশ্চন্দ্রপুর-২ নং ব্লকের সুলতান নগর গ্রাম পঞ্চায়েতের যোগীলাল গ্রামের বাসিন্দা পিতৃহীন আশিয়া খাতুনের বিয়ে হয় নতুন সাদলিচক গ্রামের বাসিন্দা আবুজার হোসেনের সঙ্গে। অভিযোগ,বিয়ের দুই বছর পর থেকেই পণের দাবিতে ওই বধূর উপরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত তাঁর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনেরা।এই ঘটনার কথা মাকে জানিয়েছিলেন আশিয়া। তবে তার বিধবা মায়ের পক্ষে লক্ষ লক্ষ টাকা দেওয়া সম্ভব ছিল না।তবুও মেয়ের সংসারের কথা ভেবে ধারদেনা করে কয়েকবার টাকা দিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও দিনের পর দিন টাকা চেয়ে অত্যাচার চালাত।ঘটনাকে কেন্দ্র করে আশিয়ার বাপের বাড়ি ও শ্বশুরবাড়ির সকলকে নিয়ে একাধিকবার গ্রামে সালিশি সভা হয়েছে।রবিবার তা মাত্রা ছাড়ায়।সেদিন রাতে আশিয়ার হাত পা বেঁধে প্রাণনাশের জন্য চাকু দিয়ে কোপাতে থাকে স্বামী ও দুই দেওর।আশিয়ার হাত ও পায়ের নার্ভ কেটে দেওয়া হয়।কোপালে চাকু মেরে জখম করে দেয়।আশিয়া সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লে মৃত ভেবে রাতেই বাড়ির বাইরে ফেলে দিয়ে আসেন পরিবারের লোকেরা।
খবর পেয়ে সকালে ছুটে যায় মেয়ের পরিবার।আশঙ্কাজনক অবস্থায় হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে আশিয়াকে।বর্তমানে সেখানেই সে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। গৃহবধূর মা হালেমা বিবি জানান, তার স্বামী ১২ বছর আগে মারা গেছে। ছয় বছর আগে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন।বিয়ের সময় ছেলের চাহিদামতো টাকা,অলঙ্কার ও আসবাবপত্র দিয়েছিলেন।বিয়ের পর থেকেই তার মেয়ের উপর অত্যাচার চালাত স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির অন্যান্য সদস্যরা। কখনও এক লক্ষ,কখনও দুই লক্ষ টাকা চাইত।না দিলেই চলত অকথ্য অত্যাচার।এরপূর্বেও বেশ কয়েকবার প্রাণনাশের জন্য হামলা চালিয়েছিল।রবিবার তা মাত্রা ছাড়িয়ে যায়।পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছেন।গৃহবধূর পরিবার ও স্থানীয়রা অভিযুক্তদের কঠোরতম শাস্তির দাবি করেছেন।
