আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবসের ভাবনা : কিছু কথা

অরুণ কুমার : ১৩ অক্টোবর ছিল “আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস’। ইংরেজিতে এই দিনটিকে বলা হয় “International Day for Disester Risk Reduction”. অর্থাৎ আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবসের ভাবনা এই বছরের অর্থাৎ ২০২৩ এর থিম রাষ্ট্রসঙ্ঘের দ্বারা ঘোষিত হয়েছে ‘অসমতার বিরুদ্ধে লড়াই করি,  দুর্যোগ সহনশীল ভবিষ্যৎ গড়ি’। দিবসটি  পালন উপলক্ষে বিশ্বের অন্যান্য দেশের পাশাপাশি আমাদের দেশেও বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। গত বছর এ বিষয়ে থিম ঘোষণা করা হয়েছিল ‘আর্লি ওয়ার্নিং অ্যান্ড আর্লি অ্যাকশন ফর অল’ যার ভাবানুবাদ করা হয়েছে ‘দুর্যোগে আগাম সতর্কবার্তা, সবার জন্য কার্যব্যবস্থা।’ এই দিনটি এমন একটি দিন বা একটি আন্তর্জাতিক দিবস যা প্রতিটি নাগরিক এবং  সরকারকে  আরও  দুর্যোগ- প্রতিরোধী সম্প্রদায় এবং দেশ গঠনে অংশ নিতে উৎসাহিত করা হয়।

Thoughts on the International Day for Disaster Reduction: A few words

রাস্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদ প্রাকৃতিক দুর্যোগ হ্রাসের জন্য আন্তর্জাতিক দশক ঘোষণার অংশ হিসেবে ১৩ অক্টোবরকে  প্রাকৃতিক দুর্যোগ হ্রাসের জন্য আন্তর্জাতিক দিবসরূপে ঘোষনা করেছে। আমরা যদি একটু পিছনের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাবো ২০০২ সালে, আরও একটি রেজোলিউশনের মাধ্যমে, সাধারণ পরিষদ প্রাকৃতিক দুর্যোগ হ্রাস, প্রতিরোধ, প্রশমন এবং প্রস্তুতি সহ একটি বিশ্বব্যাপী সংস্কৃতির প্রচারের বাহন হিসাবে বার্ষিক পালন বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। ২০০৯ সালে, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ১৩ অক্টোবরকে এই দিনের জন্য সরকারি তারিখ হিসাবে মনোনীত করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং নাম পরিবর্তন করে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ হ্রাস দিবস করা হয়েছে । এর পরবর্তী সময়কালে সারা বিশ্ব তথা আমাদের দেশে নানান ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘনিয়ে এসেছে। যার মোকাবিলা হয়েছে নানাভাবে বিভিন্ন স্তরে ‌। কোথাও সাফল্য এসেছে আবার কোথাও ব্যর্থতা।

এই দিনটি উদযাপন এর আগে আমরা যদি আর একটু ইতিহাসের পাতা ঘেঁটে দেখি তাহলে পাবো, ১৯৮৯ সাল থেকে প্রতিবছর ১৩ অক্টোবর সারা বিশ্বে ‘আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস’ উদ্‌যাপিত হয়ে আসছে। দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাসে জনগণ ও সংশ্লিষ্টদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্যই এ উদ্যোগ।

এবিষয়ে বলা যেতে পারে আবহাওয়া কিম্বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাস ও পূর্ব প্রস্তুতির কারণে বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা গেলেও প্রতিনিয়ত চরিত্র বদলাচ্ছে দুর্যোগের। এ ছাড়া নতুন আতঙ্ক হিসেবে দেখা দিয়েছে ভূমিকম্প, বজ্রপাত ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগ। দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রশিক্ষিত জনবল কাঠামো গঠনের পাশাপাশি স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহারে জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু সাম্প্রতিককালে আমরা দেখেছি উত্তরের হিমালয় সংলগ্ন একদিকে উত্তরাখণ্ডের কেদারনাথ অপরদিকে সিকিম পশ্চিমবঙ্গ লাগোয়া তিস্তা নদীতে যেভাবে বিপর্যয় ঘটে গেছে এবং মানবসম্পদ এবং প্রাকৃতিক সম্পদের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে যা ভূপ্রাকৃতিক বিশেষজ্ঞদের সামনে অনেকগুলো প্রশ্নের মুখোমুখি এনে দাঁড় করিয়েছে। এ বিষয়ে মূল কথা হলো আমরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় কতটা সক্ষম বা প্রস্তুত? আগামী দিনে আর আমাদের কি কি প্রয়োজন।

আমরা এই কথা জানি যে প্রতিবছর
দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাসে জনগণ ও সংশ্লিষ্টদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ‘আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস’ পালন করা হয়ে থাকে।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বন্যা সহ অন্যান্য বিপর্যয় মোকাবিলায় সরকার যথেষ্ট প্রস্তুত। বন্যা মোকাবিলার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে আমরা আশ্বস্ত হতে পারি। তবে আমাদের মতো দরিদ্র দেশের একের পর এক সংকট মোকাবিলা করা একটু দুরূহই বটে।

কিন্তু আমাদের হিমালয়ের পাদদেশের অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের বড় অংশ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। সংখ্যার হিসাবে প্রায় এক কোটি। মৌলিক চাহিদার অনেক কিছুই তাদের অপূর্ণ রয়েছে। হাড়ভাঙা পরিশ্রমের বিনিময়ে কোনো রকমে খেয়ে-পরে বেঁচে থাকে। করোনা সংকট তাদের রোজগারের পথ বন্ধ করে দিয়েছে। সরকার যে পরিমাণ ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করছে সমস্যার সমাধান আংশিক হলেও এখনো যথেষ্ট আর্থিক সংকটের মধ্যে রয়েছে তারা।

এ অবস্থায় কী করবে সরকার? অবিলম্বে সরকারের ত্রাণ পরিকল্পনায় আমূল পরিবর্তন আনতে হবে। যত দিন এই সংকট থাকবে, তত দিন কাজ হারানো সব অভাবী মানুষের কাছে চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পৌঁছাতে হবে। এরকম অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এমনটা মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক, যখন এমন
আশঙ্কার বিষয় সামনে আসছে; তখন সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের দরকার যথাযথ উদ্যোগ অব্যাহত রাখা। কেননা, পার্বত্য এলাকায় ধস ও সমতলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি এবং তা দীর্ঘস্থায়ী হলে এতে জল বন্দি ও ধস বিধ্বস্ত মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে। বন্যাদুর্গত এলাকায় স্কুল, হাটবাজার, রাস্তাঘাট, ঘরবাড়িসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা তলিয়ে যায়। এ ছাড়া সেতু ও সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় অনেকে এলাকা থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকে। কোথাও কোথাও দেখা দেয় তীব্র ভাঙন। এ সময় আরেকটি বিষয় উঠে আসে, যা অত্যন্ত উদ্বেগের। অধিকাংশ জায়গায় দেখা দেয় বিশুদ্ধ পানীয় জলের অভাব। বিশুদ্ধ জলের সংকট সৃষ্টি হলে জলবাহিত রোগ বাড়বে এমন আশঙ্কা অমূলক নয়। এ ছাড়া দেখা যায় প্রাণিসম্পদের অর্থাৎ গো-খাদ্যের তীব্র সংকট। ফলে এই বিষয়টি সামনে রেখেও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি এটা মনে রাখতে হবে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবিলার ক্ষেত্রে আমরা অনেকটা অসহায়। যেমন ভূমিকম্প বা জলোচ্ছ্বাস ঠেকানোর ক্ষমতা আমাদের নেই। কিন্তু যথাযথ পূর্বপ্রস্তুতি, উদ্ধার তৎপরতা ও দুর্যোগ-পরবর্তী কার্যক্রমের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি সহনীয় পর্যায়ে আনা যায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্ভাবনা কমানো ও ক্ষয়ক্ষতি সহনীয় পর্যায়ে আনার জন্য অগভীর নদী ড্রেজিং করতে হবে, ঝুঁকিপূর্ণ নদীর তীরে বাঁধ নির্মাণ করতে হবে, সম্ভাব্য দুর্যোগের ব্যাপারে ব্যাপক প্রচার চালাতে হবে, যথাযথভাবে দুর্যোগ মোকাবিলার পরিকল্পনা করতে হবে, রাস্তাঘাট মজবুত করে বানাতে হবে, জনগণকে দুর্যোগ মোকাবিলায় সচেতন করে তুলতে হবে, দুর্যোগ পরবর্তী ত্রাণ দ্রুত ভুক্তভোগীদের কাছে পৌঁছাতে হবে, প্রয়োজনীয় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করতে হবে, পর্যাপ্ত খাবার মজুদ রাখতে হবে। ওপরের ব্যবস্থাগুলো গ্রহণ করা হলে দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক কমবে বলে আশা করা যায়। এসবের জন্য অবশ্যই জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলার বাস্তবোচিত গঠনমূলক পরিকল্পনা থাকতে হবে। সেই সঙ্গে লাগবে আগাম প্রস্তুতিও। সর্বোপরি এ কথা বলতে হয় যে আমাদের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ – এই রাজ্যের উত্তর অংশ হিমালয় সংলগ্ন এলাকা ভূমিকম্প প্রবণ নদীমাতৃক দেশ ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ২০০ টার বেশি নদী ও ঝোড়া এই অঞ্চলের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। অর্থাৎ বলা যেতে পারে উত্তরবঙ্গ হল প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ অঞ্চল বিশেষ করে উত্তরে ধস সমতলে বন্যা। প্রতি বছরই বন্যাসহ নানা ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হয়। বলার অপেক্ষা রাখে না, প্রাকৃতিক দুর্যোগকে রোধ করার কোনো উপায় নেই, কিন্তু প্রস্তুতি ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত হলে ক্ষয়ক্ষতি অনেকটাই কমানো সম্ভব। হিমালয় সংগঠন পার্বত্য এলাকার ধস প্রবণ ক্রমাগত কয়েকদিন বৃষ্টিপাত হলে ধসের আশঙ্কা বাড়ে সেই সঙ্গে দেখা দেয় সমতলে বা তরাই অঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা। সংগত কারণেই ধস ও বন্যাকবলিত মানুষের দুর্ভোগ বৃদ্ধি পায় । তাই এ বিষয়টি গুরুত্ব অনুধাবন করে বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করাটা খুব জরুরী।

এনডিআরএফ বা প্রাকৃতিক বিপর্যয় প্রতিরোধ বাহিনী সঠিকভাবে প্রস্তুত রাখা সেইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রাকৃতিক ভূবৈচিত্র এবং ওই এলাকায় সংঘটিত বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য প্রশিক্ষিত বাহিনীর প্রয়োজন রয়েছে হলে অনেক ভূ-প্রাকৃতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেছেন। যদিও একথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে,
দেশের কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার প্রাকৃতিক
দুর্যোগ মোকাবিলায় নিরন্তর প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে । এর জন্য একাধিক উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে । বিপর্যয় মোকাবিলা (ডিএম) আইন ২০০৫-এর মাধ্যমে বিপর্যয় মোকাবিলার বিষয়ে জাতীয় নীতি কার্যকর করা হয়েছে । একটি সামগ্রিক, একাধিক দুর্যোগ মোকাবিলা ভিত্তিক, প্রযুক্তি নির্ভর ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে দুর্যোগ মোকাবিলা, প্রশমন ও আগাম প্রস্তুতি গড়ে তুলে  দুর্যোগ প্রতিরোধী ভারত গঠনের লক্ষ্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে । ২০১৬ সালে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ প্রথম জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা কার্যকর করে । পরবর্তীতে ২০১৯ সালে এই পরিকল্পনায় কিছু পরিবর্তন নিয়ে আসা হয় । দুর্যোগ মোকাবিলায় নিজ নিজ এলাকায় পরিকল্পনা, আগাম প্রস্তুতি, উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ ও মানুষের প্রাণহানি রোধ করতে কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন মন্ত্রক/বিভাগকে এই নির্দেশিকা অনুসরণ করতে বলা হয়েছে । জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে বন্যা সহ বিভিন্ন বিপর্যয় মোকাবিলায় একাধিক নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে । 

সেই সঙ্গে আমরা এটাও জানি যে, দুর্যোগ
পরিস্থিতিতে উদ্ধারকাজ চালানোর জন্য কেন্দ্রীয় সরকার জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী(এনডিআরএফ) প্রতিষ্ঠা করেছে । এমনকি কেন্দ্রীয় সরকার এনডিআরএফ কর্মী ও অন্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য নাগপুরে একটি এনডিআরএফ অ্যাকাডেমি প্রতিষ্ঠা করেছে । উদ্ধার কাজে নিযুক্ত কর্মীদের জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে । এমনকি জৈবিক, রাসায়নিক, রেডিওলজিক্যাল এবং নিউক্লিয়ারের মতো জরুরি বিপর্যয় মোকাবিলায় এনডিআরএফ কর্মীরা যাতে সুষ্ঠভাবে উদ্ধারকাজ চালাতে পারে তার জন্য প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে । পাশাপাশি একাধিক আন্তর্জাতিক আলোচনাচক্র, কর্মশালা, প্রশিক্ষণ শিবিরেও অংশ নিয়েছেন এনডিআরএফ কর্মীরা । তাদের বিশ্বমানের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও কৌশল সম্পর্কেও দক্ষ করে তোলা হয়েছে । এনডিআরএফ কর্মীরা নিরলস ভাবে ‘কমিউনিটি ক্যাপাসিটি বিল্ডিং ও জনসচেতনতা এবং প্রস্তুতিমূলক কর্মসূচি’ চালিয়ে যাচ্ছে । এক্ষেত্রে উত্তরের ভূপ্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রয়েছে এমন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রয়োজন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তরবঙ্গের পার্বত্য এলাকায়।
 সম্প্রতি জানা গিয়েছে,জাতীয় বিপর্যয়
মোকাবিলা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এবং এনডিআরএফ বন্যা, ভূমিধ্বস, ভূমিকম্পের মতো বিপর্যয়ে উদ্ধারকাজে নিয়োজিত অন্য সংস্থা/কর্তৃপক্ষকে নিয়মিত সহযোগিতাও করে চলেছে । রাজ্যসভায় সম্প্রতি এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে একথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শ্রী নিত্যানন্দ রাই ।
এই সমস্ত সরকারি ভাষ্য এবং ঘটনা প্রবাহ আমাদের সামনে উঠে এসেছে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম তথা ওয়েবসাইটের দেওয়া তথ্যের মাধ্যমে। এর পাশাপাশি যেটা জরুরি সেটা হল জনগণের অংশগ্রহণ। স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন মূলক সংস্থা অর্থাৎ পঞ্চায়েত পৌরসভা জেলা পরিষদ মহকুমা ও জেলা প্রশাসন এদের কর্তা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সীমাবদ্ধতা অসম্পূর্ণতা অবশ্য রয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো জনসংযোগ ও প্রকৃত সমন্বয়ের অভাব। স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত যারা সরাসরি এলাকায় কাজ করেন যারা সংশ্লিষ্ট এলাকার পাহাড় পার্বত্য এলাকা নদী ঝোরা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল, এই সমস্ত রিসোর্স পারসনকে আমরা দেখি নিজ নিজ চেষ্টায় বিপর্যয়ে পরবর্তী সময়ে উদ্ধার কাজে নামতে, সরকারি বিপর্যয়ের ব্যবস্থায় দ্রুততার সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছতে না পারলেও এই সমস্ত মানুষেরা উদ্ধার কাজে নেমে মানুষের সাহায্য করে থাকেন। এদের একটা বড় অংশ আজও সরকারি সাহায্য ও স্বীকৃতি পায়নি। এটা দুর্ভাগ্যজনক। এ ধরনের স্থানীয় সম্পদ, দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটের পরিপ্রেক্ষিতে বিপর্যয়ের মোকাবিলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। এক্ষেত্রে কোনরকম ছলচাতুরি বা স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি অভাব, সঠিকভাবে এবং তাৎক্ষণিকভাবে বিপর্যয় মোকাবিলা প্রতিরোধে একটা বড় ঘাটতি বা ফাঁক আজও থেকে গেছে।

সিভিল ডিফেন্স এনসিসি স্বেচ্ছাসেবকরা পালাক্রমে যদি এই বিপর্যয়ের মোকাবিলার অন্যতম স্বেচ্ছাসেবক গ্রুপে যুক্ত হতে পারে তাহলে তারা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা অর্জন করবে পরিষেবা দেওয়ার মাধ্যমে অভিজ্ঞতা অর্জন করবে এই বিষয়টিও সংশ্লিষ্ট বিপর্যয় মোকাবিলায় যে মন্ত্রক, দপ্তর এবং বিভাগ রয়েছে বা যারা নীতি নির্ধারক পলিসি মেকার তাদেরকে একটু অন্যভাবে চিন্তা করতে হবে। বলতে বাধা নেই যে এখানে কিছু কিছু দপ্তরে ঘুঘুর ভাষা বাসা হয়ে যাওয়ায় আর্থিক একটা তছনছের দুর্নীতির জায়গা রয়েছে যা দুর্ভাগ্যজনক।
এই বিষয়টি সরকার ও প্রশাসনকে গুরুত্ব সহকারে ভাবা বিশেষভাবে প্রয়োজন রয়েছে।

তথ্য সূত্র: পিআইবি, New Delhi, United Nations General Assembly Session 44 Resolution 236. 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *