লোনের টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগে বেসরকারি ঋণ প্রদানকারী সংস্থার কর্মীকে আটকে রেখে বিক্ষোভ গ্রাহকদের

আমিরুল ইসলাম, মালদা, ২৪ নভেম্বর’২৩ :
গ্রামের মহিলাদের ভুল বুঝিয়ে আধার কার্ডের মাধ্যমে হাতের আঙুলের ছাপ নিয়ে লোনের টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগে এক বেসরকারি ঋণ প্রদানকারী সংস্থার কর্মীকে আটকে রেখে বিক্ষোভ গ্রাহকদের।ঘটনাটি ঘটেছে আজ শুক্রবার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গাংনদীয়া গ্রামে। জানা গেছে, ভারত ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন লিমিটেড যার পূর্বে নাম ছিল এস কে এস মাইক্রোফাইন্যান্স লিমিটেড।এই বেসরকারি ঋণ প্রদানকারী সংস্থা গ্রামে গ্রামে গিয়ে দল করে মহিলাদের ঋণ প্রদান করে থাকেন।অভিযোগ, গ্রামের মহিলারা কোন ঋণই পাননি কিন্তু সংস্থা থেকে বারবার ঋণের টাকা পরিশোধ করার জন্য বাড়িতে লোক চলে আসছে।

সংস্থার লোকেরা চাপ দিচ্ছে অবিলম্বে বকেয়া ঋণের টাকা শোধ করতে হবে নইলে তাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।আজ শুক্রবার ঋণের কিস্তির টাকা চাইবার জন্য গ্রামে গিয়ে ওই সংস্থার এক কর্মী ক্রমাগত স্থানীয় মহিলাদের চাপ দিতে শুরু করেন।এরপরই ওই গ্রামের লোকেরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওই ঋণ প্রদানকারী সংস্থার প্রতিনিধিকে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।তাদের দাবি অবিলম্বে ওই মাইক্রোফাইন্যান্স সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী এলাকায় এসে এই সমস্যার সমাধান না করলে তারা ওই এজেন্টকে ছাড়বেন না।তারা আরো জানান, গ্রাহকদের ঋণ পরিশোধ হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও তাদের একাউন্টে ঋণ বকেয়া দেখাচ্ছে।

Protesting customers by arresting an employee of a private lending company for allegedly withdrawing loan money

অন্য কোন সংস্থায় ঋণ নিতে গেলে তারা ঋণ পাচ্ছেন না।পরে তারা জানতে পারেন তাদের ভুল বুঝিয়ে আঙুলের ছাপ নিয়ে ওই সংস্থার কর্মীরা টাকা তুলে আত্মসাৎ করে নিয়েছে।সেই লোনের টাকা পরিশোধ না হলে তারা আর কোন সংস্থার কাছে লোন পাবেন না।সংস্থার টোল ফ্রি নাম্বারে একাধিকবার অভিযোগ জানিয়েও কোনো সমাধান হচ্ছে না। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে ভালুকায় এক সময় ওই বেসরকারি ঋণ প্রদান সংস্থার অফিসটি ছিল। বর্তমানে তুলসীহাটাতে রয়েছে। সেই অফিসের অধীনের কর্মীরা পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়ে গ্রামের মহিলাদের দলভিত্তিক লোন প্রদান করেন। কয়েক মাস আগে এই সংস্থারই এক কর্মী শিবা রায় গাংনদীয়া গ্রামে এসে বেশ কয়েকজন মহিলার আঙুলের ছাপ নিয়ে নেন।জানান যে তাদের বড় অংকের ঋণ করে দেবেন। কিন্তু কোন মহিলাই ঋণ পাননি। তারপরে তিনি ওই এলাকা থেকে ট্রান্সফার হয়ে অন্য জায়গায় চলে যান। এরপরই ওই মহিলাদের কাছে সংস্থার কর্মীরা এসে বারবার ঋণ পরিশোধ করার জন্য কিস্তি দেওয়ার চাপ দিতে থাকে। আজকেও ওই সংস্থার এক কর্মী বিকি নুনিয়া নামে এক যুবক ওই গ্রামে এসে অবিলম্বে মহিলাদের ঋণ পরিশোধ করার জন্য চাপ দেন এবং সেই টাকা অতিসত্বর পরিশোধ করতে বলেন।এরপরই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ওই গ্রামের সাধারণ মানুষ। তাদের দাবি তাদের বাড়ির স্ত্রীরা কেউই কোন প্রকার লোন নেননি। এর আগে যেগুলো লোন নেওয়া হয়েছিল সেগুলো শোধ হয়ে গিয়েছে। তাহলে নতুন করে আবার লোনের জন্য কিস্তি চাওয়া কেন। এরপরই স্থানীয় বাসিন্দারা ওই মাইক্রোফাইন্যান্সের কর্মীকে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তাদের দাবি সংস্থার কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে গ্রামে এসে এই ব্যাপারে মিটমাট না করলে তারা এই কর্মীকে ছাড়বেন না। ঘটনার জেরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *