পিনাকী রঞ্জন পাল : শুধু জলপাইগুড়ি নয়, উত্তরবঙ্গের মানুষের মনের মণিকোঠায় বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন নবারুণ সংঘ ক্লাব ও পাঠাগারের শ্যামা পুজো। এদের এ বছর ৬৫ তম পুজো হলেও বিগ বাজেটের পুজো শুরু হয়েছে বিগত তিন বছর যাবৎ। তবে এই তিন বছরের বুর্জ খলিফা, কেদারনাথ মন্দির, কামাখ্যা মন্দিরের আদলে মন্ডপ তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।

কারন অন্যান্য পুজো কমিটির মতো এরা মন্ডপ ভাড়া করে আনেন না, এদের মণ্ডপটি ক্লাব চত্বরেই প্ৰথমবারের মতো তৈরি হয়। আর এদের আরো একটি বিশেস্বত্ব হল এরা সেই স্থাপত্যের অবিকল প্রতিরূপ তৈরি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন – নবারুণ সংঘ ক্লাব ও পাঠাগারের এই প্রয়াস তাদেরকে অন্য সব পুজো কমিটি থেকে আলাদারকম ভাবে পরিচিতি দিয়েছে। আর তাই সারা বছর উত্তরবঙ্গবাসী নবারুণ সংঘ ক্লাব ও পাঠাগারের শ্যামা পূজা দেখার জন্য মুখিয়ে থাকেন।

এবছর নবারুণ সংঘ ক্লাব ও পাঠাগারের শ্যামা পুজোর বিশেষ নিবেদন পুরীর জগন্নাথ মন্দির। যার প্রস্তুতি চলছে বেশ জোরকদমে। উল্লেখ্য,শহর সংলগ্ন গোমস্তা পাড়ার এই ক্লাব নতুন কিছু চমক দিয়ে থাকে। এবছরও তার অন্যথা হচ্ছে না। এবছর রথ যাত্রার মধ্য দিয়েই পুজোর প্যান্ডেল তথা থিমের কাজ শুরু হয়েছে। এই বিষয়ে ক্লাবের সম্পাদক রাজেশ মণ্ডল জানালেন, নবারুণ সংঘ ক্লাব ও পাঠাগারের প্রতি মানুষের একটু আলাদাই এক্সপেক্টেশন থাকে। আমরাও চাই প্রতিবছর দর্শনার্থীদের নতুন কিছু উপহার দিতে।

এ বছর তাই কালীপুজোয় আমাদের নিবেদন পুরীর জগন্নাথ মন্দির। প্রতিবছরই আমরা নতুন ভাবে নতুন কিছু তৈরি করি। থিম তৈরির জন্য যাবতীয় বস্তু ক্রয় করেই করা হয়। অন্য কোনো জায়গার প্যান্ডেলের অংশ এনে বা তা জুড়ে দিয়ে এমন থিম আমরা করছি না। যতটা পারা যায় বাস্তবের সেই মন্দির বা বস্তুটির প্রতিরূপই আমরা করার চেষ্টা করি। এবারের জগন্নাথ মন্দিরের একেবারে ভেতরের পটচিত্র তৈরীর দায়িত্বে রয়েছেন খোদ পুরীর রঘুরাজপুরের শিল্পীরা।

জগন্নাথ দেবের নিম কাঠের মূর্তি তৈরি হচ্ছে পুরীতে। মণ্ডপের ফাইবারের কাজ করছেন হায়দ্রাবাদের রামজি ফিল্ম সিটির শিল্পী। শিল্পীরা যথেষ্ট পরিশ্রম করে জগন্নাথ মন্দিরের একেবারে বাস্তব রূপ তুলে ধরার চেষ্টা করছেন। এবারের বাজেট মোটামুটি ধরা হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ লক্ষ টাকা। দর্শনার্থীদেরও যথেষ্ট ভালো লাগবে আমাদের এবারের নিবেদন বলে তিনি জানান। আগামী ২৮ তারিখ রয়েছে পুজোর উদ্বোধন। চলবে ৪ঠা নভেম্বর পর্যন্ত।