রাহুল মন্ডল : রাজ্যে কল কারখানার অভাব, তাই মালদা থেকে প্রচুর সংখ্যায় পরিযায়ী শ্রমিক পরিবারের সদস্যদের মুখে দুমুঠো অন্ন তুলে দেওয়ার জন্য যাচ্ছে ভিন রাজ্যে। কিন্তু যাওয়ার কিছুদিন পরেই তাঁদের কারো না কারোই আসছে দুঃসংবাদ। শিউলি ফুল যেমন রাতে ফুটে, সকালে ঝরে যায়, ঠিক তেমনই পরিযায়ী শ্রমিকেরা, আজ ভিন রাজ্যে গিয়ে কাল আসে তার মৃত্যুর খবর।
এবার দুঃসংবাদ এলো মালদার মানিকচক ব্লকের গোপালপুর অঞ্চলের এক পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবারে। তার পরিবার সূত্রে জানা গেছে,
তিন মাস আগে মুম্বাইয়ে কাজ করতে যায় মানিকচকের গোপালপুর অঞ্চলের সহবতটোলা গ্রামের পরিযায়ী শ্রমিক হাফিজুদ্দিন শেখ বয়স 29 বছর। গত শনিবার সে তার অস্থায়ী ঠিকানা থেকে
কাজের উদ্দেশ্যে বের হয়, সে বোরোয়ালি
স্টেশনে ট্রেনে উঠা বা নামার সময় অত্যাধিক ভিড়ের কারণে পা পিছলে পড়ে গেলে ট্রেনের ধাক্কা খায়। আর এই ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।

ঘটনার খবর পেয়ে তার প্রতিবেশী পরিযায়ী শ্রমিকেরা সেখানে ছুটে আসে। পুলিশ তার দেহটিকে পোস্টমর্টেমের জন্য স্থানীয় এক হাসপাতালে নিয়ে যায়। ময়নাতদন্ত হলেই দেহ ফিরবে তার গ্রামে। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে তার পরিবারসহ সারা গ্রামে।
মৃত শ্রমিকের পরিবারে রয়েছে তার স্ত্রী, এক শিশুকন্যা, এক পুত্র এবং বিধবা মা। মৃতের পরিবারের উপার্জনের আর কেউ রইল না। নুন আনতে পান্তা ফুরায়, এমন অবস্থা সেই পরিবারের। ছেলেকে হারিয়ে হাফিজ উদ্দিন এর মায়ের চোখের জল যেন অঝোরে ঝরে পড়ছে। কিভাবে সংসার চলবে তাদের , কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না। তাই তিনি সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, পরিযায়ী শ্রমিক মারা গেলে রাজ্য সরকারের তহবিল থেকে যে অনুদান পাওয়া যায়, সেই অনুদান যেন তাদের দেওয়া হয়। রাজ্য সরকারের কাছে একই আর্জি জানিয়েছেন তার স্ত্রী কাউসারা খাতুন এবং তার আত্মীয় মোহাম্মদ আশরাফুল হক।