জলপাইগুড়ি, ২৩ জানুয়ারি: এ বছরই প্রথমবার আয়োজন করা হয়েছে “জলপাইগুড়ি উৎসব”, যা ইতিমধ্যেই শহরবাসীর কাছে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত এই উৎসব ২২ জানুয়ারি শুরু হয়েছে এবং চলবে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। উৎসবের দ্বিতীয় দিনে সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ছিল “হ্যাপি স্ট্রিট”।

হ্যাপি স্ট্রিট: শীতের সকালে প্রাণের উচ্ছ্বাস
শীতের কামড়ে কাঁপতে থাকা শহরেও মানুষের উৎসাহে কোনও ভাটা পড়েনি। প্রবল ঠান্ডা এবং ঘন কুয়াশার মধ্যে দিনভর সূর্যের দেখা না মিললেও “হ্যাপি স্ট্রিট”-এর জাদুতে মেতে উঠেছিল জলপাইগুড়ি। পূর্ত দপ্তর মোড় (PWD মোড়) থেকে জেলা শাসকের দপ্তর পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে সাজানো হয়েছিল “হ্যাপি স্ট্রিট”।

এই রাস্তায় কালো পিচের উপর রং তুলিতে ফুটিয়ে তোলা হয় নানান দৃষ্টিনন্দন ছবি। স্কুল পড়ুয়া, সাধারণ নাগরিক এবং প্রশাসনের কর্মকর্তারা একসঙ্গে নিজেদের সৃজনশীলতার ছাপ রেখে গেছেন এই রাস্তায়। এর পাশাপাশি নাচ, গান, যোগব্যায়াম প্রদর্শনী, পুতুল নাচ, রণ পা, ডগ শো প্রভৃতি বিনোদনের আয়োজন করা হয়েছিল।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান
এই বিশেষ আয়োজনের উদ্বোধন করেন জলপাইগুড়ির জেলা শাসক শামা পারভীন, জেলা পুলিশ সুপার খান্ডবাহালে উমেশ গণপত এবং আদিবাসী উন্নয়ন মন্ত্রী বুলুচিক বড়াইক। উদ্বোধনী মঞ্চে অতিথিদের গানের তালে নাচতেও দেখা যায়।

মানুষের ঢল ও অংশগ্রহণ
এই উৎসব ছিল সত্যিই একটি মিলন মঞ্চ। শহরের ছোট থেকে বড়, ৮ থেকে ৮০—সবাই সমান উৎসাহে অংশ নেন। কেউ ছবি আঁকায় মগ্ন, কেউবা ক্যামেরায় মুহূর্ত বন্দি করতে ব্যস্ত। কেউ আবার রিলস বানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করছেন। উৎসবের প্রাণবন্ত পরিবেশ উপভোগ করতে দেখা যায় শহরবাসীকে।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আকর্ষণ
“হ্যাপি স্ট্রিট” ছাড়াও জলপাইগুড়ি উৎসবের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হচ্ছে মিলন সংঘ ময়দানে। নাচ, গান এবং অন্যান্য সাংস্কৃতিক কার্যক্রম শহরের মানুষকে মুগ্ধ করেছে।

জলপাইগুড়ি উৎসবের এই প্রথমবারের আয়োজন শহরবাসীর হৃদয়ে একটি বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে। শীতের সকালে এমন প্রাণবন্ত একটি আয়োজন জলপাইগুড়ি শহরের ঐক্য, মিলন এবং সংস্কৃতির এক অসাধারণ উদাহরণ। শহরবাসী যেমন এই উৎসবের আনন্দে মেতেছে, তেমনই জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। আগামী বছরগুলিতে এই উৎসব আরও বড় আকারে পালিত হবে, এমনটাই আশা করছেন সবাই।

জেলা পুলিশ সুপার খান্ডবাহালে উমেশ গণপত বলেন, “এই ধরনের উৎসব শুধু আনন্দই নয়, বরং শহরের মানুষের মধ্যে মিলন এবং একতা বাড়াতে সাহায্য করে। ভবিষ্যতে এরকম আরও বড়ো আয়োজনের পরিকল্পনা করা হবে।”

উল্লেখ্য জলপাইগুড়ি উৎসবের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে জলপাইগুড়ির মিলন সংঘ মাঠে। আগামী ২৫শে জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই উৎসব। এই প্রথম এত সুন্দর একটি উৎসবের আয়োজন করায় জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন শহরবাসীরা ।