জলপাইগুড়ি : সন্ধ্যা নামতেই জলপাইগুড়ি করলা নদীর ঘাট যেন রূপ নেয় বারাণসীর গঙ্গা তটে। পিতলের দীপশিখা, পুরোহিতদের মন্ত্রোচ্চারণ আর ভক্তদের ভিড়ে আধ্যাত্মিক পরিবেশ তৈরি হয় জলপাইগুড়ির মোহিতনগরের ডাঙ্গাপাড়ায়। বারুণী মেলা উপলক্ষে এবারও আয়োজিত হয়েছে গঙ্গা আরতি, যা শুধুমাত্র স্থানীয় মানুষ নয়, উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত ভক্তদেরও মুগ্ধ করছে।
স্থানীয় মা শ্মশানকালী পুজো কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এই গঙ্গা আরতির ভাবনা শুরু হয়েছিল বছর দুয়েক আগে। মন্দির কমিটির সদস্যরা বারাণসী গিয়ে সেখানকার ঐতিহ্যবাহী গঙ্গা আরতি প্রত্যক্ষ করেন এবং সেই অভিজ্ঞতা থেকেই জলপাইগুড়িতে এই অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। এ বছর দ্বিতীয় বর্ষে পদার্পণ করল এই মহোৎসব।

গত ২৭ মার্চ থেকে শুরু হওয়া এই গঙ্গা আরতি প্রতিদিন সন্ধ্যায় করলা নদীর তীরে ভক্তদের এক মহামিলন ক্ষেত্র তৈরি করছে। অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ হিসেবে এবারও বারাণসী থেকে আসা পাঁচজন পুরোহিত এই পবিত্র আরতিতে অংশ নিচ্ছেন। দীপমালার আলো, গঙ্গা স্তোত্রের ধ্বনি, ঘাটে জমায়েত হওয়া শত শত মানুষের সম্মিলিত প্রার্থনা—সব মিলিয়ে এক অপার্থিব অনুভূতি সৃষ্টি করছে এই আয়োজন।
মন্দির কমিটির সভাপতি রঞ্জিত রায় জানান, “এটি আমাদের দ্বিতীয় বর্ষ। গত বছর বিপুল সাড়া পাওয়ার পর এ বছরও আমরা এই আধ্যাত্মিক আয়োজন করেছি। আপাতত ২ এপ্রিল পর্যন্ত এই সন্ধ্যা আরতি চলবে, তবে মানুষের উৎসাহ ও অনুরোধের ভিত্তিতে আমরা আরও কয়েকদিন এটি চালানোর পরিকল্পনা করছি।”

গঙ্গা আরতির এই পরিবেশ শুধু ধর্মীয় আবহ তৈরি করছে না, বরং এটি জলপাইগুড়ির সংস্কৃতি ও পর্যটনকেও সমৃদ্ধ করছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, এটি শহরের অন্যতম দর্শনীয় ও আধ্যাত্মিক কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে।
বারাণসীর মতো জলপাইগুড়িতেও গঙ্গা আরতি—এ যেন উত্তরবঙ্গের আধ্যাত্মিক পরিমণ্ডলে এক নতুন দিগন্তের সূচনা!