IPL 2025 : চার ম্যাচে টানা হার, ব্যাটিং বিপর্যয়ে দিশেহারা হায়দরাবাদ—সিরাজের সামনে পুড়ল কামিন্স বাহিনী

স্পোর্টস ডেস্ক : রেকর্ড গড়া সেই প্রথম ম্যাচে ২৮৬ রানের ঝড় তুলেছিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। তখনই অনেকেই ভেবেছিলেন, এবার বুঝি হায়দরাবাদ বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিংয়েও ভয়ঙ্কর রূপে ফিরল। কিন্তু তার পর থেকেই যেন ধসে পড়েছে সেই ব্যাটিং অর্ডার। একের পর এক ম্যাচে ব্যর্থ ট্রেভিস হেড, অভিষেক শর্মা, ঈশান কিশনরা। আর গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে এই ম্যাচ যেন হায়দরাবাদের সেই সব ব্যাটিং দুর্বলতার নগ্ন প্রদর্শন।

ঘরের মাঠে গুজরাতের বিরুদ্ধে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় হায়দরাবাদ। কিন্তু শুভমন গিলের সেই সিদ্ধান্তকে একেবারে সঠিক প্রমাণ করেন হায়দরাবাদের ‘ঘরের ছেলে’ মহম্মদ সিরাজ। সিরাজের প্রথম স্পেলেই দুই ওপেনার—হেড ও অভিষেক—ফিরে যান যথাক্রমে ৮ ও ১৮ রানে। ঈশান কিশনের ব্যাটে ছিল কিছুটা ধৈর্যের ছাপ, কিন্তু সেও ভেঙে যায় প্রসিদ্ধ কৃষ্ণার বলেই। শুরুতেই ব্যাটিং ব্যর্থতার ছাপ স্পষ্ট হয়ে যায়।

মাঝে ক্লাসেন ও নীতীশ রেড্ডির মধ্যে একটা ৫০ রানের জুটি আশা জাগালেও, তাঁরা বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। বাঁহাতি স্পিনার সাই কিশোর তাঁদের ফেরান। ১৫ ওভারের মধ্যেই ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে হায়দরাবাদ। সিরাজের ঘূর্ণিপাকে পড়ে অনিকেত বর্মা ও সিমরজিৎ সিংহর উইকেট তুলে নেন সিরাজ। ৪ ওভারে মাত্র ১৭ রান দিয়ে ৪ উইকেট—এটাই আইপিএলে সিরাজের সেরা বোলিং পারফরম্যান্স।

২০ ওভারে ৮ উইকেটে হায়দরাবাদ করে মাত্র ১৫২ রান। এই রান তাড়া করা কঠিন নয়, যদি না বিপক্ষের বোলিং আগুন ছড়ায়।

গুজরাতের ইনিংস শুরুতেই ধাক্কা খায়। শামির বলে সুদর্শন ও কামিন্সের বলে বাটলার ফিরে যান দ্রুত। কিন্তু তখনই রঙ বদলায় ম্যাচ। ব্যাট হাতে আগুন ঝরান ওয়াশিংটন সুন্দর। আইপিএলে এই প্রথম সুযোগ পেয়েই ঝড় তুললেন। তাঁর সঙ্গে তাল মেলাতে থাকেন শুভমন গিল। সুন্দর যখন ৪৯ রানে আউট হন, ততক্ষণে ম্যাচ অনেকটাই গুজরাতের মুঠোয়।

এরপর কাজটা সম্পূর্ণ করেন শুভমন ও রাদারফোর্ড। শুভমনের ব্যাটে আসে অনবদ্য অর্ধশতক। আর রাদারফোর্ড অভিষেকের এক ওভারেই তুলে নেন ১৮ রান, যা কার্যত ম্যাচ শেষ করে দেয়। ২০ বল বাকি থাকতেই ৭ উইকেটে জিতে নেয় গুজরাত টাইটান্স।

ম্যাচের শেষে একটা চিত্র চোখে পড়ার মতো—হায়দরাবাদের হতাশ সমর্থকেরা ম্যাচ শেষ হওয়ার আগেই গ্যালারি ছাড়তে শুরু করেছেন। একটা সময় যারা হায়দরাবাদের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের জন্য উচ্ছ্বসিত ছিলেন, তাঁরাই এখন হতাশার সাগরে ডুবে যাচ্ছেন।

শুভমনদের কাছে এটা টানা তৃতীয় জয়। আর কামিন্সদের জন্য টানা চতুর্থ হার। কৌশলের অভাব, আত্মবিশ্বাসের টান আর ব্যাটিং বিপর্যয়—এই তিনের জোটে যেন দিশেহারা হায়দরাবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *