জলপাইগুড়ি, ৩০ এপ্রিল: আজ শুভ অক্ষয় তৃতীয়া। শুভ কাজ, ব্যবসা শুরুর দিন এবং দেবতা পূজার পুণ্যতিথি হিসেবে বিবেচিত এই দিনটি ঘিরে বুধবার সকাল থেকেই ভক্তিভাবনায় মগ্ন হয়ে উঠেছে গোটা জলপাইগুড়ি। শহরের যোগমায়া কালী মন্দির, দিনবাজার কালী মন্দির-সহ একাধিক মন্দিরে সকাল থেকেই চোখে পড়ার মতো ভিড় দেখা গেছে ভক্তদের।
‘অক্ষয়’ শব্দের অর্থ—যা কখনও ক্ষয় হয় না। বিশ্বাস, এই দিন কোনও শুভ কাজ শুরু করলে তা চিরস্থায়ী হয়। সেই বিশ্বাসেই ভক্তরা ভোর হতেই পুজোর থালা হাতে পৌঁছে যান শহরের বিভিন্ন মন্দিরে। বিশেষ করে ব্যবসায়ী মহলে দিনটির তাৎপর্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নতুন খাতা চালু, লক্ষ্মী-গণেশের আরাধনা, ব্যবসা বৃদ্ধির প্রার্থনায় সেজে উঠেছে দোকানপাট, অফিসঘর।

যোগমায়া কালী মন্দিরে দেখা গেল সকাল থেকেই লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছেন বহু মানুষ। পুজো দিয়ে, প্রদীপ জ্বালিয়ে, গাঁথা ফুলের মালা নিবেদন করে সংসারের মঙ্গল কামনা করছেন অনেকে। মন্দিরের পুরোহিত জানান, “এদিন ভোর থেকেই অক্ষয় তৃতীয়ার বিশেষ পূজা চলছে। গণেশ, লক্ষ্মী এবং কালী মাতার আরাধনায় বহু ভক্ত অঞ্জলি দিয়েছেন। সংসার, ব্যবসা আর জীবনের শান্তি কামনায় সকলেই এসেছেন মায়ের কাছে।”
শহরের একাধিক বস্ত্র ও গয়নার দোকানে লক্ষ করা গেছে গণেশ পুজোর আয়োজন। এক দোকানের মালিক রাজীব ভৌমিক বলেন, “প্রতি বছর অক্ষয় তৃতীয়ায় পুজো দিয়ে নতুন খাতা খুলি। ব্যবসার শুভ সূচনা হয় এই দিন থেকেই। মা লক্ষ্মী ও গণেশের কৃপায় যেন সারা বছর কাজ ভালো হয়, এই কামনাই করি।”
শুধু ব্যবসায়ী মহল নয়, সাধারণ গৃহস্থ পরিবারেও আজ ছিল পুজোর ব্যস্ততা। বাড়ির উঠোনে ঘরোয়া পূজার আয়োজন, মিষ্টি-ভোগ রান্না, আর সন্ধ্যায় প্রদীপ জ্বালিয়ে পারিবারিক শান্তির প্রার্থনায় মগ্ন হয়েছেন অনেকেই।
এদিন জলপাইগুড়ি শহরে ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও সংস্কৃতির মেলবন্ধনে যেন এক শান্ত, পবিত্র আবহ তৈরি হয়। ধর্ম, বিশ্বাস ও ঐতিহ্যের মিশেলে আজকের দিনটি হয়ে উঠল আত্মিক উন্নয়নের এক উদাহরণ।