ডুয়ার্সে ফের চিতাবাঘের হানা; জলপাইগুড়ির ক্রান্তিতে জখম দুই জন; আতঙ্কে গ্রামবাসী

ক্রান্তি, ১৩ মে: চিতাবাঘের হানায় ফের রক্তাক্ত ডুয়ার্স। জলপাইগুড়ি জেলার ক্রান্তি ব্লকের রাজাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের ধলাবাড়ি সংলগ্ন লালবাড়ি এলাকায় মঙ্গলবার সকালে আচমকা চিতাবাঘের হামলায় গুরুতর জখম হলেন দুই বাসিন্দা।

বন ও জনবসতির দ্বন্দ্ব যেন ডুয়ার্সে নিত্যদিনের চিত্র। খাবারের খোঁজে লোকালয়ে ঢুকে পড়া চিতাবাঘ কখনও বাড়ির উঠোন থেকে পোষা প্রাণী তুলে নিয়ে যাচ্ছে, তো কখনও বাড়ির ভেতরেই তার হানা। এবার ঘটনাস্থলে আরও ভয়ংকর রূপে দেখা দিল এই বন্য শিকারি।

স্থানীয় বাসিন্দা জ্যোতিষ রায় মঙ্গলবার সকালে তাঁর বাড়ির পাশে পাটক্ষেতে যান। আচমকা ঝোপের আড়াল থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে চিতাবাঘ। রক্তাক্ত হন তিনি, কিন্তু কোনওক্রমে প্রাণে বাঁচেন। পরে আরও এক ব্যক্তি, রাবিব হোসেন চৌধুরীর ওপর চিতাবাঘটি ফের আক্রমণ করে বলে স্থানীয়রা জানান।

বিগত কয়েকদিন ধরে গ্রামে হাঁস, ছাগল, এমনকি বাছুর তুলে নেওয়ার ঘটনা দেখে চিতাবাঘের উপস্থিতি আঁচ করেছিলেন বাসিন্দারা। কিন্তু খোলা মাঠ থেকে এবার সরাসরি মানুষের ওপর আক্রমণে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

খবর পেয়ে এলাকায় পৌঁছান আপালচাঁদ রেঞ্জের বনকর্মীরা ও ক্রান্তি ফাঁড়ির পুলিশ। বনদপ্তরের পক্ষ থেকে এলাকায় জাল পাতা হয়েছে। হ্যান্ডমাইকে ঘোষণা করে বাসিন্দাদের নিরাপদ দূরত্বে থাকার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

গ্রামবাসীর প্রশ্ন — কবে শেষ হবে এই দুঃস্বপ্ন?
লালবাড়ির এক বাসিন্দা বলছেন, “আমরা দিনভর ভয় নিয়ে চলি। বাচ্চাদের বাড়ির বাইরে বের করতে ভয় করে। সরকার বা বনদপ্তর কবে স্থায়ী সমাধান দেবে?”

চিতাবাঘ এখনও পাটক্ষেতের মধ্যেই আছে বলে অনুমান। বনদপ্তরের টিম রাতভর এলাকাটি ঘিরে নজরদারি চালাবে বলে জানা গেছে।

বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই মানুষের জীবন রক্ষাও জরুরি। ক্রান্তির এই ঘটনা ফের একবার দেখিয়ে দিল—জঙ্গল আর জনপদের সীমারেখা যতদিন অস্পষ্ট থাকবে, ততদিন নিরাপদ নয় কেউই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *