জলপাইগুড়ি, ২০ মে: রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যখন উত্তরবঙ্গ সফরে, তখনই শহরের বুকে ফেটে পড়ল প্রতিবাদের আগুন। দুই বছরের এক শিশু কন্যার উপর যৌন হেনস্তার অভিযোগে গ্রেফতার পড়শি এক অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী। আর সেই ঘটনার জেরে সোমবার জলপাইগুড়ির কোতোয়ালি থানার সামনে দেখা গেল অন্য দৃশ্য—ঝাঁটা হাতে রাস্তায় বসে আছেন মা-বোনেরা, মুখে একটাই স্লোগান, “উই ওয়ান্ট জাস্টিস!”

গত শনিবার ঘটে যাওয়া বিভীষিকাময় ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়তেই রোষে ফেটে পড়ে স্থানীয় বাসিন্দারা। শুধু গ্রেফতার নয়, অভিযুক্তের জন্য সরাসরি ফাঁসির দাবি জানায় এলাকাবাসী। রবিবার অভিযুক্তকে আদালতে তোলা হলেও ছুটির কারণে একদিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। সোমবার ফের তাকে বিশেষ পকসো কোর্টে পেশ করে পুলিশ।

তবে এখানেই শেষ নয়। নাগরিক মঞ্চ, স্থানীয় সমাজকর্মী এবং শতাধিক বাসিন্দা এদিন কোতোয়ালি থানার সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করে স্মারকলিপি তুলে দেন জেলা পুলিশ সুপারের দপ্তরে। সমাজকর্মী নবেন্দু মৌলিক বলেন, “শুধু শাস্তি নয়, এই অপরাধের জন্য দৃষ্টান্তমূলক ফাঁসির সাজা চাই আমরা।”
নাগরিক মঞ্চের কর্মী ভার্গবী রায়ের বক্তব্য আরও উদ্বেগজনক—“শিশুটির পরিবার জানিয়েছে, ঘটনার রাতে পুলিশের ভূমিকা অত্যন্ত সন্দেহজনক ও অমানবিক ছিল। এমনকি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে।”
এই ঘটনার ফলে শহরে উত্তেজনা তুঙ্গে। অভিযুক্তের বাড়িতে হামলা ও তার স্কুটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে। জলপাইগুড়ি পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষজন আজ ভয়, ক্ষোভ ও ঘৃণার মিশেলে মুখর।

শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে এ যেন এক সামাজিক প্রতিবাদের বহিঃপ্রকাশ—জলপাইগুড়ির মানুষ যেন নিজেই বলছে, “আর নয়, এবার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।”