জলপাইগুড়ি : জলপাইগুড়ির আদালতের ভবিষ্যৎ কি চক্রান্তের শিকার? এমনই প্রশ্ন তুলে মঙ্গলবার বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন জলপাইগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবীরা। রাজ্যের আইনমন্ত্রীর কাছে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের দুটি থানার মামলা জলপাইগুড়ি জেলা আদালতের বদলে শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতে স্থানান্তরের প্রস্তাবে উত্তাল হয়ে ওঠে বার চত্বর।

বার অ্যাসোসিয়েশনের অভিযোগ—এ এক সুপরিকল্পিত চক্রান্ত, যার লক্ষ্য জলপাইগুড়ির বিচার বিভাগীয় পরিকাঠামোকে খর্ব করা। আইনজীবীদের কথায়, এটি শুধুই একটি মামলা স্থানান্তরের বিষয় নয়, বরং এক দীর্ঘ মেয়াদি অপচেষ্টা, যাতে জলপাইগুড়ির আদালতের গুরুত্ব খর্ব হয় এবং বিচারব্যবস্থার ভারসাম্য বদলে যায়।
বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সোমনাথ পাল জানান, “এই প্রস্তাব জলপাইগুড়ি আদালতের ভৌগোলিক কর্তৃত্ব খর্ব করার সামিল। আমরা এই ষড়যন্ত্রে কোনোভাবেই অংশ হতে পারি না।”

সম্পাদক অভিজিত সরকার জানান, “আদালতের অধিক্ষেত্র কমানোর চক্রান্ত হলে বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে আমরা বাধ্য হব।”
আইনজীবী গৌতম দাসও জানান, “এই প্রস্তাব আসলে বিচারব্যবস্থাকে রাজনৈতিক ও প্রভাবশালীদের স্বার্থে বাঁকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা।”
এদিন জরুরি সভা শেষে আইনজীবীরা বিক্ষোভ মিছিল করে জেলা আদালতের মূল ফটকে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন।
আইনজীবীদের একাংশ জানান, এর ফলে শুধুমাত্র আইনজীবী মহল নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হবেন সাধারণ মানুষও, যাঁদের দীর্ঘদিন ধরে জলপাইগুড়ি আদালতের ওপর নির্ভরশীল থেকে ন্যায়বিচারের পথ খুঁজতে হয়।
মঙ্গলবার রাতে বার অ্যাসোসিয়েশনের সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল শিলিগুড়ি স্টেট গেস্ট হাউসে গিয়ে রাজ্যের আইনমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তাঁদের তীব্র আপত্তির কথা জানিয়ে দেন।
জলপাইগুড়ি বনাম শিলিগুড়ি—সার্কিট বেঞ্চ বিতর্কের পর ফের নতুন করে দুই শহরের মধ্যে রেষারেষির ইঙ্গিত। এবার সেই আগুনে ঘি ঢালছে বিচার স্থানান্তরের বিতর্ক। আইনমন্ত্রীর হাতে থাকা সেই প্রস্তাবের ভবিষ্যৎ এখন রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করলেও জলপাইগুড়ি আইনজীবীদের আন্দোলন যে দ্রুত থামছে না, তা মঙ্গলবারের ছবি স্পষ্ট করে দিল।