জলপাইগুড়ি : মরসুমের পালাবদলের এক চেনা দৃশ্যপটে ফের দেখা দিল বৃষ্টি। সোমবার, সপ্তাহের প্রথমভোরেই জলপাইগুড়ি জেলাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি। কখনও টুপটাপ, কখনও মৃদু দমকা হাওয়ার ছোঁয়ায় শহর যেন এক পশলা স্বস্তি পেল গরমের ক্লান্তির মাঝে। সকাল থেকে আকাশ মেঘলা, সূর্যদেব একরকম মুখ লুকিয়ে আছেন মেঘের আড়ালে।
আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী কয়েক ঘণ্টায় আলিপুরদুয়ার, মালদা, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে হালকা বজ্রপাতের সঙ্গে ঝিরঝিরে বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া বইতে পারে। জলপাইগুড়িতেও সেই প্রভাব পড়েছে ইতিমধ্যেই।
২৫ মে, রবিবার পর্যন্ত জলপাইগুড়িতে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আর সর্বনিম্ন ২৫.৭ ডিগ্রি। আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ ৭৫ শতাংশ। বৃষ্টির অঙ্ক যদিও ‘ট্রেস’ হিসাবে নথিভুক্ত, তবে সকালবেলার আকাশ আর বাতাস জানান দিচ্ছে আরও কিছু আসন্ন পরিবর্তনের।
আবহাওয়াবিদদের মতে, বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। আগামী মঙ্গলবার এই নিম্নচাপ স্পষ্টভাবে ধরা দিতে পারে, যার ফলে উত্তর ও দক্ষিণ—উভয় বঙ্গেই বাড়তে পারে বৃষ্টির তীব্রতা। এমনকি দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুও দেশের মূল ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছে। কেরলে ইতিমধ্যেই বর্ষা ঢুকে গেছে গত শনিবার।
উত্তরবঙ্গে বর্ষার প্রবেশের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হচ্ছে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। তারা আরও জানিয়েছে, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে চলতি সপ্তাহেই। পাশাপাশি দার্জিলিং ও কালিম্পংয়েও বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সপ্তাহের শেষে বৃষ্টি আরও বাড়তে পারে। মৎস্যজীবীদের ইতিমধ্যেই সতর্ক করা হয়েছে সমুদ্রের দিক থেকে আসা ঝোড়ো হাওয়ার সম্ভাবনার কারণে।
বর্ষা ঠিক কবে পুরোপুরি ঢুকবে, তা এখনও সময়ের অপেক্ষা। তবে আকাশ, হাওয়া, আর অস্থির মেঘের ভঙ্গিমা বলে দিচ্ছে—উত্তরবঙ্গে বর্ষা আর খুব দূরে নেই। জলপাইগুড়ির মানুষেরা তাই এখন অপেক্ষা করছেন প্রকৃতির সেই ছন্দপতনের, যে বৃষ্টির সুরে মিলিয়ে যাবে খরার ক্লান্তি।
প্রকৃতির এই রূপান্তর শুধু আবহাওয়ার নয়, এক মধুর প্রতীক্ষার—বর্ষার আগমনী বার্তা হয়তো সত্যিই পৌঁছে যাচ্ছে উত্তরের দরজায়।