শিলিগুড়ি, ৩ জুন : রবিবার রাত থেকে শিলিগুড়ি পুরনিগমের একাধিক ওয়ার্ডে আচমকা বন্ধ হয়ে যায় পানীয় জল সরবরাহ। সকাল হতেই জল না পেয়ে সমস্যায় পড়েন সাধারণ মানুষ। কোথাও রান্নার জল নেই, কোথাও আবার শিশুখাদ্যের সংকট—পুর শহরের প্রতিটি অলিগলিতে ছড়িয়ে পড়ে একটাই প্রশ্ন, “জল গেল কোথায়?”

যদিও পরিস্থিতি সামাল দিতে সোমবার সকাল থেকেই পুরনিগমের পক্ষ থেকে শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে পাঠানো হয়েছে মোট ৩৫টি জলের ট্যাঙ্কার। আজ জলের ট্যাঙ্কারের সংখ্যা বৃদ্ধি করে প্রায় ৬৩টি করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রায় দেড় লাখ জলের পাউচও বিলি করা হয়েছে। কিন্তু তাতেও কমছে না সাধারণ মানুষের ক্ষোভ। স্থানীয়দের অভিযোগ, “এরকম করে হঠাৎ জল সরবরাহ বন্ধ হয়নি আগে। আগেভাগে মাইকিং করে জানানো হত, ফলে জল মজুত করে রাখতাম। এবার তো কিছুই জানানো হয়নি!”

এই বিষয়ে শিলিগুড়ি পুরনিগমের ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার স্পষ্ট করেছেন পরিস্থিতির কারণ। তাঁর কথায়, “বিগত কয়েকদিনে সিকিম এবং পার্বত্য অঞ্চলে টানা বৃষ্টিপাত হয়েছে। তিস্তা নদীর জলস্তর বেড়েছে এবং সেইসঙ্গে মহানন্দার জলে অতিরিক্ত পলি জমে গেছে। এই কারণে জল পরিশোধনের কাজ ব্যাহত হয়েছে, তাই আপাতত সরবরাহ বন্ধ রাখতে হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, “পুরনিগমের তরফে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব জল পরিষেবা স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।”
তবে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশ্ন উঠছে—এত বড় সমস্যার আগাম বার্তা কেন দেওয়া হয়নি? এক গৃহবধূর কথায়, “আমরা যদি জানতাম জল বন্ধ থাকবে, অন্তত কিছুটা জমিয়ে রাখতাম। হঠাৎ করে এমন হলে তো বাচ্চা থেকে বয়স্ক—সবারই সমস্যা।”

অন্যদিকে ট্যাঙ্কার পৌঁছালেও কোথাও সময়মতো খবর না পাওয়ার কারণে অনেকে জল পান করতে পারছেন না। এর ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে।
বর্তমানে শহরের বেশ কিছু ওয়ার্ডে দিনভর লাইনে দাঁড়িয়ে জল সংগ্রহ করতে দেখা যাচ্ছে বাসিন্দাদের। পানীয় জল সংকট যেন ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রার শহরে আরও বড় সংকটে পরিণত হয়েছে।

পুরনিগম জানিয়েছে, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে এবং প্রয়োজনে আরও ট্যাঙ্কার সরবরাহ বাড়ানো হবে।