জলপাইগুড়ি, ১১ জুন: গুয়াবাড়ি ও বড়দিঘি গ্রামে ফের চিতাবাঘের আনাগোনা। তাও আবার শাবকসহ! বুধবার সকাল থেকেই এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায় যখন একাধিক গ্রামবাসী চিতাবাঘ এবং শাবকের উপস্থিতি লক্ষ্য করেন। বিশেষ করে শিশুদের সুরক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন স্থানীয়রা।
পরিস্থিতি আঁচ করে গ্রামবাসীরা তড়িঘড়ি যোগাযোগ করেন মাল স্কোয়াড রেঞ্জ, গরুমারা ওয়াইল্ডলাইফ ডিভিশন এবং পশু সংরক্ষণে কর্মরত সংগঠন SPOAR-এর সঙ্গে।

চিতাবাঘের আগমনে উদ্বিগ্ন গ্রামবাসীদের পাশে দাঁড়াল প্রশাসন। বন দপ্তর ও SPOAR যৌথভাবে গুয়াবাড়ি গ্রামে সচেতনতা কর্মসূচির আয়োজন করে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন গ্রামবাসী, বনকর্মী ও SPOAR সদস্যরা।
SPOAR-এর পক্ষ থেকে ‘মানব-চিতাবাঘ সহাবস্থান’ (Human-Leopard Coexistence) বিষয়ে নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ভাগ করে নেওয়া হয়। গ্রামবাসীদের শেখানো হয়— চিতাবাঘ দেখা গেলে কীভাবে ধৈর্য বজায় রাখতে হবে, একা বা অন্ধকারে ঘোরাঘুরি না করা, পশুদের খোলা জায়গায় না রাখার পরামর্শ, বন দপ্তরকে দ্রুত খবর দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা।

বন দপ্তর ইতিমধ্যেই গ্রামের ভিতরে একটি খাঁচা বসিয়েছে চিতাবাঘ ধরার জন্য। SPOAR-এর সহযোগিতায় চব্বিশ ঘণ্টা নজর রাখা হচ্ছে এলাকায়। গ্রামবাসীদেরও বলা হয়েছে সতর্ক থাকতে।
SPOAR-এর এক্সিকিউটিভ মেম্বার সাবিনা পারভীন বলেন— “বন্যপ্রাণীরা শত্রু নয়। আমরা যদি সচেতন হই, তাহলে মানুষ ও প্রাণী পাশাপাশি থাকতে পারে।”
ওয়াইল্ডলাইফ স্কোয়াড-২ এর রেঞ্জ অফিসার অংকন নন্দী জানান— “চিতাবাঘের গতিবিধি নজরে রাখা হচ্ছে। প্রাণীটিকে নিরাপদে জঙ্গলে ফেরানোর প্রক্রিয়া চলবে নিরন্তর।”

SPOAR-এর সম্পাদক অর্কপ্রভ মজুমদার বলেন— “এই ধরনের পরিস্থিতিতে আতঙ্ক নয়, সমঝোতা ও সচেতনতা জরুরি। মানুষ ও বন্যপ্রাণীর সহাবস্থানই ভবিষ্যতের পথ দেখাবে।”
বর্তমানে গোটা এলাকা নজরদারির আওতায়, তবে আতঙ্ক নয়, সচেতনতার মাধ্যমে পরিস্থিতি মোকাবিলায় জোর দিচ্ছে প্রশাসন।