জলপাইগুড়ি, ২৮ জুন: শহর লাগোয়া রানীনগর এলাকায় ফের দুঃসাহসিক এটিএম লুটের চেষ্টায় চাঞ্চল্য ছড়াল। শুক্রবার গভীর রাতে বিএসএফ ক্যাম্প সংলগ্ন একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএম কিয়স্কে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। তবে পুলিশ ও প্রযুক্তির যৌথ তৎপরতায় রক্ষা পায় এটিএমের ক্যাশ ভল্ট।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, ব্যাঙ্কের মুম্বাই কন্ট্রোল রুমে বসেই সিসিটিভি লাইভ ফুটেজে ধরা পড়ে চুরির চেষ্টা। সঙ্গে সঙ্গে জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ কন্ট্রোলরুমে খবর পাঠানো হয়। মুহূর্তের মধ্যে কোতোয়ালি থানার টহলদারি ভ্যান সহ বিশিষ্ট আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পুলিশ দেখে দুষ্কৃতীরা পালানোর চেষ্টা করে। তবে পুলিশের জালে আটকে পড়ে এক দুষ্কৃতী, পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও একজনকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার হওয়া দুজনের নাম কৌশিক মুখার্জী ও প্রতীক সরকার। দুজনেই রানীনগরের বাসিন্দা বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে দুটি মোটরবাইক ও একটি গ্যাস সিলিন্ডার, যা দিয়ে এটিএম ভেঙে লুট চালানোর পরিকল্পনা ছিল বলে অনুমান।
শনিবার সকালে কোতোয়ালি থানায় আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৌভনিক মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “আমরা সময়মতো খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। দেখা গিয়েছে দুষ্কৃতীরা এটিএমের বাইরের ঢাকনা ভেঙে ফেলেছিল, তবে ক্যাশ ভল্টে পৌঁছাতে পারেনি। এটিএম থেকে কোনও টাকা চুরি হয়নি। দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে তদন্ত শুরু হয়েছে। আজ তাদের আদালতে তুলে পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানানো হবে।”
সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ডিএসপি (হেড কোয়ার্টার) পার্থ কুমার সিং, আইসি সঞ্জয় দত্ত সহ অন্যান্য অফিসাররা।
প্রসঙ্গত, চলতি মাসেই ময়নাগুড়িতে আন্তঃরাজ্য গ্যাং এটিএম কেটে প্রায় ৫৪ লক্ষ টাকা লুট করে। সেই ঘটনায় চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে জলপাইগুড়ি পুলিশ। তবে রানীনগরের ঘটনায় তাৎক্ষণিক পুলিশের তৎপরতাই বাঁচিয়ে দিল বড় ক্ষতির হাত থেকে।
প্রশ্ন উঠছে, জেলাজুড়ে এত ঘনঘন এটিএম লুট বা চেষ্টার পেছনে বড় কোনও সংগঠিত চক্র কাজ করছে কি না! তবে পুলিশ আশ্বস্ত করেছে, প্রযুক্তির সাহায্যে রাতদিন নজরদারি চালানো হচ্ছে এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে।
সতর্কতা ও দ্রুত পদক্ষেপ যে কীভাবে অপরাধ ঠেকাতে পারে, রানীনগরের এই ঘটনা তার বাস্তব উদাহরণ।