শিলিগুড়ি, ২ অক্টোবর: আজ বিজয়া দশমীর সকাল থেকেই শহরের পুজোমণ্ডপ আর বনেদি বাড়িগুলোতে ধরা পড়ল এক অন্যরকম আবহ। দেবীর বিদায়ের মুহূর্তে শোক আর আনন্দ মিশে গেল একসাথে। বধূরা সাদা-লাল শাড়ি পরে, শঙ্খধ্বনি আর ঢাকের তালে মেতে উঠলেন সিঁদুর খেলায়। লাল সিঁদুরে রঙিন মুখ, উজ্জ্বল হাসি আর ভেজা চোখ—সব মিলিয়ে শহর যেন রঙিন আবেগে ভেসে গেল।
শহরের বিভিন্ন ক্লাব পুজোয় আজ ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। বিশেষ করে শতবর্ষের দ্বারপ্রান্তে থাকা প্রাচীন পুজোয় নিয়ম মেনে সম্পন্ন হয় প্রতিটি আচার। সকালেই দেবীর বরণ শেষ হওয়ার পর শুরু হয় সিঁদুর খেলার আসর। ভোর থেকে মহিলা সদস্যরা মণ্ডপে ভিড় জমিয়েছিলেন। একে অপরের গালে সিঁদুর মেখে তাঁরা শুধু দেবীকে বিদায় জানালেন না, আগামী বছরের পুনরাগমনের ডাকও দিলেন।
শুধু মণ্ডপেই নয়, শহরের বনেদি বাড়িগুলোতেও আজ ছিল উৎসবের আবহ। ঘোষ পরিবার, চক্রবর্তী পরিবার থেকে শুরু করে অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী বাড়িগুলোতেও মহিলাদের উচ্ছ্বাস চোখে পড়েছে। বাড়ির আঙিনা ভরে উঠেছে হাসি, সিঁদুরে রঙিন মুখ আর আবেগঘন শুভেচ্ছাবিনিময়ে।
আসলে বিজয়া দশমীর সিঁদুর খেলা শুধুমাত্র একটি আচার নয়; এটি বাঙালির চিরন্তন সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি। দেবীর বিদায়ের ক্ষণে সিঁদুরে রাঙানো শুভেচ্ছা যেন এক প্রতিশ্রুতি বহন করে— “আসছে বছর আবার হবে।”
শিলিগুড়ির আজকের এই রঙিন আবেগ প্রমাণ করল, বিদায়েও আনন্দ আছে, বিদায়েও মিলন আছে, আর বিদায়েই লুকিয়ে আছে ফেরার প্রত্যাশা।