জলপাইগুড়ি, ৬ অক্টোবরঃ প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গের বুকে আজ জেগে উঠল আশার আলো। গতকাল দুর্গাপূজার কার্নিভালের জন্য আসতে না পারলেও আজ খরস্রোতা নদী, জলমগ্ন গ্রাম পেরিয়ে উত্তরবঙ্গবাসীর পাশে দাঁড়াতে হাজির হলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাগরাকাটা, মাল, ধূপগুড়ি, মাদারিহাট- একের পর এক বন্যা বিধ্বস্ত এলাকা ঘুরে দেখলেন তিনি। মানুষের দুঃখ, ক্ষতির গল্প শুনলেন মনোযোগ দিয়ে।

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান, “রাজ্য সরকার মানুষের পাশে আছে। কারও ঘর ভেসে গেলে আমরা নতুন ঘর করে দেব, কেউ একা নয়।” মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য ও পরিবারের একজনকে চাকরির আশ্বাস দেন তিনি। তিনি বলেন, ব্যাঙ্কে গিয়ে চেক ভাঙালে টাকা অ্যাকাউন্টে ঢুকবে। এদিন মৃতদের পরিবারের সদস্যের হাতে ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দিয়ে সিএম বলেন, তাঁদের চাকরি কী করতে হবে, তা পুলিশ জানিয়ে দেবে। চাকরির জন্য দুর্গতদের বায়োডেটা জমা দিতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।

এদিন তিনি প্রশাসনকে নির্দেশ দেন দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা, বাঁধ ও ঘরবাড়ি মেরামত করার জন্য। পাশাপাশি দুর্গত এলাকায় ত্রাণ, খাদ্য ও ওষুধ পৌঁছে দেওয়ার কাজও শুরু হয়েছে যুদ্ধকালীন তৎপরতায়।
বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে এসে রাজ্যের বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা মানুষের বিক্ষোভের মুখে পড়লেও মুখ্যমন্ত্রীর সফর ঘিরে ছিল কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা, তবু হাজার হাজার মানুষ নদীর ধারে, কাদা-জলে দাঁড়িয়ে একনজর দেখতে ছুটে এলেন তাঁকে। একদিন পরে হলেও দুর্যোগের আঁধারে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর এই উপস্থিতি যেন এক উজ্জ্বল প্রতীক — আশ্বাসের, সাহসের এবং মানবিকতার।