নিজস্ব সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি : জলপাইগুড়ি জেলার তিনটি পুরসভার মোট ৫৭ টি আসনের মধ্যে ৪৭ টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল বামফ্রন্ট। জলপাইগুড়ি পুরসভার ২৫ টি আসনের মধ্যে ১৫ টিতে প্রার্থী দেয় বামফ্রন্ট। পুরসভার ২৫ টি আসনের মধ্যে ২২ টি আসনে জয়ী হয় তৃণমূল কংগ্রেস, ২ টি ওয়ার্ডে জয়ী হয় জাতীয় কংগ্রেস এবং ১ টি ওয়ার্ডে জয়ী সিপিআই(এম) তথা বামফ্রন্ট। মালবাজার পুরসভার ১৫ টি আসনের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস জয়ী ১৪ টি আসনে, ১টি আসনে বিজেপি জয়যুক্ত হয়েছে।

নবগঠিত ময়নাগুড়ি পুরসভার মোট ১৭টি আসনের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস ১৬টি আসনে ও ১টি ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থী জয়যুক্ত হয়েছে। প্রাথমিক পর্যালোচনায় দেখা গেছে জলপাইগুড়ি শহরের ২৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৫ টিতে বামফ্রন্ট প্রার্থী দিয়ে একটি ওয়ার্ডে বিজয়ী হলেও বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় ভোট বেড়েছে বামফ্রন্টের জলপাইগুড়ি পুর এলাকায়। গত বিধানসভা নির্বাচনে পুর এলাকায় বামফ্রন্টের ভোট ছিল ৮% মতো। এবারের পুর ভোটে তা বেড়ে দাঁড়ালো ১৬.৭৫% তে। গত বিধানসভায় বিজেপির ভোট ছিল ৪০% বেশি। জলপাইগুড়ি শহরের পুরভোটে তা কমে দাঁড়ালো ১২.২০ % তে।

২৩ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী সিপিআই (এম) প্রার্থী সঞ্চিতা পঞ্চানন (ধর) মোট ভোটের ৬৮.৩ শতাংশ পেয়ে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী সুজাতা সরকার (বর্ধন) ৪০.৯% ভোটে পরাজিত করেছেন। সিপিআই(এম) প্রার্থী পেয়েছেন ১৪০২ ভোট, যেখানে তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছেন মাত্র ৫৬৪ টি ভোট। জলপাইগুড়ি শহরের ২৫ টি ওয়ার্ডের ফলাফলে দেখা গেছে দু-তিনটি ওয়ার্ড বাদে বেশিরভাগ ওয়ার্ডের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বামফ্রন্টের প্রার্থীরা।

সারা বছর মানুষের সাথে থাকার জন্য এই জয় বলে অভিমত বামফ্রন্টের। জয়ীর সার্টিফিকেট নিয়ে এলাকায় ফিরে গিয়ে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে মিছিল বের করেন ২৩ নম্বর ওয়ার্ড এর সিপিআই(এম)এর বিজয়ী কাউন্সিলর সঞ্চিতা পঞ্চানন (ধর)। স্লোগানে লাল আবিরে লাল পতাকার মিছিল থেকে জনগণকে পাশে থাকার জন্য অভিনন্দন জানানো হয়। নবনির্বাচিত কাউন্সিলর সঞ্চিতা পঞ্চানন ধর জানান এই নিয়ে টানা তিনবার এই ওয়ার্ডে জয়ী হয়ে আসছে বামফ্রন্ট। আমাদের এলাকায় উন্নয়নের জন্য এখনো অনেক কাজ বাকি। আগামী দিনে রাজনৈতিক রঙ না দেখে ওয়ার্ডবাসী সকলকে সাথে নিয়ে ওয়ার্ড এলাকার সামগ্রিক উন্নয়ন করা হবে।
পুর নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের ব্যাপক জয়ের মাঝেও বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বামফ্রন্ট কর্মীরা। তাদের অভিযোগ, বামফ্রন্টের কাউন্টিং এজেন্টরা কাউন্টিং হলে প্রবেশ করে দেখতে পান বেশিরভাগ ইভিএম মেশিন এর ব্যাটারি হাই দেখাচ্ছে। সকাল সাড়ে ছটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত মেশিনে ভোট নেওয়ার পর কি করে ইভিএম এর ব্যাটারি হাই থাকতে পারে প্রশ্ন তোলেন তারা। বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড এর ইভিএম এর সিল ভাঙা এ বিষয়ে তাঁরা তাৎক্ষণিক অভিযোগ করলেও প্রশাসনের তরফে তাদের জানানো হয় ব্যাটারি কেন হাই দেখাচ্ছে তা তারা বলতে পারবেন না ইঞ্জিনিয়াররা বলতে পারবে।