অরুণ কুমার : একসময়ে তৃণমূলে ছিলেন, তারপর বিজেপি; আবার তৃণমূলে ফিরে আসেন বাংলার রাজনীতির অন্যতম চাণক্য বলে পরিচিত মুকুল রায়। সেই মুকুল রায় এখন আক্ষরিক অর্থে কোন দলে সেটা স্পষ্ট নয় কারো কাছে। গত বিধানসভা নির্বাচনে তিনি কাঁচরাপাড়া বিধানসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন বিজেপির প্রার্থী রূপে। তারপর যোগ দেন তৃণমূলে। এরপর তাকে সর্বভারতীয় তৃণমূলের সহ-সভাপতি করা হয়। তাঁকে দেওয়া হয় বিধানসভার পিএসসি চেয়ারম্যান পদ। সমস্যা তৈরি হয় সেখান থেকেই। কিছুদিন আগেও তিনি স্পিকারকে হলফনামায় বলেছিলেন যে তিনি যে দল থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন সেই দলে রয়েছেন অর্থাৎ বিজেপিতে আছেন। এই ধোঁয়াশা ক্রমশ বাড়তে থাকে। এরপর বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায় পিএসি চেয়ারম্যান পদ খারিজের দাবি নিয়ে শীর্ষ আদালতে মামলা করেন। অন্য দিকে,মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজের দাবি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
গত মাসে দু’টি মামলাই বিচারপতি নাগেশ্বর রাও ও বিচারপতি বিআর গভাইয়ের বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, কলকাতা হাইকোর্টকে এই মামলাটি এক মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। ফলে এখন শুনানি পিছনোর ফলে আরো এক সপ্তাহ সময় পড়ে থাকবে এই মামলা।
উল্লেখ করা যেতে পারে যে, মুকুলের বিধায়ক পদ এবং পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) চেয়ারম্যান পদ খারিজ করার দাবিতেই এই মামলা করা হয়। ওই পদ বিরোধীদের প্রাপ্য বলেও দাবি করেছে বিজেপি। এই নিয়ে বিধানসভার স্পিকারের হলফনামাও তলব করেছিল আদালত। স্পিকার হলফনামা দিলেও পাল্টা জবাবি হলফনামা দিতে পারেনি বিজেপি। তাদের বক্তব্য ছিল, হাইকোর্টের নির্দেশ মোতাবেক ১৭ মার্চ স্পিকার হলফনামা তাদের কাছে দেননি। দিয়েছেন ২০ মার্চ। সেই কারণে জবাব তৈরি করা যায়নি।
এই অবস্থায় মুকুল রায়ের দলত্যাগ বিরোধী আইন মামলার শুনানি শেষ হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে । এই মামলাটি চলছিল প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে।
প্রসঙ্গত, ২১ মার্চ মুকুলের দলত্যাগ বিরোধী আইন মামলার হলফনামায় বিজেপি-কে আরও দু’দিন সময় দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। বিজেপি-র পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, বিপক্ষের দেওয়া হলফনামা তাদের কাছে দেরি করে পৌঁছেছে। ফলে জবাবি হলফনামা দিতে আরও দু’দিন সময় দিতে হবে। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ সেই আবেদন মেনে নেয়। এই মামলার শুনানি স্থগিত রাখা হয়।তবে বৃহস্পতিবার এই মামলার রায় ঘোষণা হতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। শুনানিতে মুকুলের বিপক্ষে রায় ঘোষণা হলে খারিজ হতে পারে তাঁর পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) চেয়ারম্যানের পদ।
এখন দেখার বিষয় মহামান্য হাইকোর্ট এ বিষয়ে কি রায় প্রদান করছেন।
Photo source- FB page.