পোল্ট্রি ফার্মে ৩০০টি গাছ কেটে দেওয়া নিয়ে জোর বিতর্ক

রাহুল মন্ডল, মালদা, ১৮ এপ্রিল ২০২২ : মালদা জেলার প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পোল্ট্রি ফার্মে প্রতিদিন তিন লক্ষ ডিম উৎপাদনের লক্ষ্যে পোল্ট্রি ফার্মের এলাকার প্রায় ৩০০টি গাছ কেটে দেওয়া হয়েছে, এ ঘটনায় জোর বিতর্ক দেখা দিয়েছে গাছ কাটার প্রতিবাদে আন্দোলনে পাশাপাশি অবস্থান বিক্ষোভে যেতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের মালদা জেলা শাখা।

মালদা জেলা কৃষি দফতরের কৃষি ফার্ম এলাকায় জেলা প্রাণি বিকাশ সম্পদ দফতরের একটি পুরোন পোল্ট্রি ফার্ম ছিল। সেই পোল্ট্রি ফার্মটি বন্ধ হয়ে রয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মালদা জেলায় একটি বড় মাপের পোল্ট্রি ফার্ম গড়ার কথা কয়েক মাস আগে ঘোষণা করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ জন্য জেলার পুরনো পোল্ট্রি ফার্মের সেই জমিতেই ওই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির পোল্ট্রি ফার্ম করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গেছে, মালদায় এমন একটি পোল্ট্রি ফার্ম হবে যেখানে প্রতিদিন অন্তত তিন লক্ষ ডিম উৎপাদন হবে।

তাতে মালদা জেলার ডিমের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি অন্যান্য কিছু জেলার ডিমের চাহিদা মেটাবে বলে আশাবাদী প্রাণিসম্পদ বিকাশ বিভাগ। এদিকে, মেগা সেই পোল্ট্রি ফার্ম গড়তে গিয়ে পুরনো ফার্ম চত্বরের ছোট- বড় মিলিয়ে তিনশোর বেশি গাছ নির্বিচারে কেটে ফেলা হচ্ছে বলে অভিযোগ। আম গাছের পাশাপাশি অন্যান্য গাছও কেটে ফেলা হচ্ছে। আর এই গাছ কাটার প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ।

সুনীল দাস, জেলা সম্পাদক, পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ

সংগঠনের জেলা সম্পাদক সুনীল দাস বলেন, “একেই জেলাসদর ইংরেজবাজার শহরের গাছের সংখ্যা দিন দিন কমছে। তার উপর একসঙ্গে প্রায় ৩০০ গাছ কেটে শহরের প্রাকৃতিক ভারসাম্যকে নষ্ট করার চেষ্টা চলছে। অবিলম্বে গাছ কাটা বন্ধ করতে হবে‌ না হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলন অবস্থান-বিক্ষোভ এ যেতে বাধ্য হব।”

উৎপল কুমার কর্মকার

জেলা প্রাণিসম্পদ বিকাশ বিভাগের উপ অধিকর্তা উৎপল কুমার কর্মকার বলেন, “অত্যাধুনিক প্রযুক্তির পোল্ট্রি ফার্ম গড়ার জন্য বন দফতরের অনুমতি নিয়ে প্রায় ৩০০ গাছ কাটা হচ্ছে। আমরা ওই চত্বরে নতুন করে গাছ লাগাব এবং জেলায় যে ৩৪ টি পশু হাসপাতাল রয়েছে সেখানেও আমরা নিয়মিত গাছ লাগিয়ে আসছি।” জেলার বনাধিকারিক সিদ্ধার্থ বি বলেন, “অনুমতি নিয়েই গাছ কাটা হচ্ছে। এদিকে গাছ কাটা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান উতোর। জেলা বিজেপির সাংগঠনিক দক্ষিণ মালদার সভাপতি পার্থ সারথী ঘোষ জানান, “সরকারের সঠিক পরিকল্পনার অভাব রয়েছে আমাদের যেমন পোল্ট্রি ফার্ম দরকার তেমন পরিবেশকে রক্ষা করা দরকার গাছ কাটা এটা পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকারক।”

কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী

অন্যদিকে এই বিষয়ে তৃণমূলের রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী জানান, “বিরোধীরা তো বিরোধিতা করার জন্যই। ওরা বলবে কিছু গাছকে যদি কেটে দিয়ে আবার অন্য জায়গায় যদি গাছ লাগিয়ে নতুন প্ল্যান করা যেতেই পারে পাশাপাশি আমাদের ডিম উৎপাদন করা খুব দরকার।”

কাটা হচ্ছে গাছ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *