নিজস্ব সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি, ১ জুন ২০২২ : দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান, জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশন ছুঁয়ে বাংলাদেশ ছুটে গেল মিতালি এক্সপ্রেস, স্টপেজের দাবী জানালো নাগরিক মঞ্চ।

বুধবার সকাল দশটা অন্যান্য দিনের তুলনায় জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশনের দুপাশে উৎসাহী জনতার ভিড়। কারণ দীর্ঘ ৫৬ বছর পর জলপাইগুড়ির মাটি ছুঁয়ে রেল যাত্রা শুরু হল প্রতিবেশি দেশ বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে।

স্টেশনের দুই নম্বর লাইন থেকে সাধারণ মানুষকে দূরে সরে থাকার বার্তা দেওয়া হলো, এরপরেই আনুমানিক ঘন্টায় ৯০ কিলোমিটার বেগে ছুটে গেলো সুসজ্জিত মিতালি এক্সপ্রেস। যদিও এই ঐতিহ্যবাহী টাউন স্টেশনে ট্রেনটির আপাতত স্টপেজ নেই। মিতালি এক্সপ্রেস নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন ছেড়ে জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশন ছুঁতেই আনন্দে মেতে ওঠেন জলপাইগুড়ি শহরের মানুষ।

জলপাইগুড়ি নাগরিক মঞ্চের সদস্যরা ব্যানার হাতে সমস্ত যাত্রীদের শুভেচ্ছা জানান। স্টেশনে উপস্থিত ছিলেন নাগরিক মঞ্চের কর্মকর্তা গোবিন্দ রায়, তপন চক্রবর্তী সহ অসংখ্য মানুষ। আর যাত্রা শুরুর দিনই জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশনে স্টপেজের দাবী জানালো জলপাইগুড়ি নাগরিক মঞ্চ।

এই প্রসঙ্গে গোবিন্দ রায় জানান, এক সময় ট্রেনে চড়ে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু নেমে ছিলেন এই স্টেশনে। আমরা মিতালি এক্সপ্রেস ট্রেনটির শুভকামনা করার পাশাপাশি ভারত বাংলাদেশের মধ্যে আজ থেকে শুরু হওয়া এই ট্রেনের স্টপেজ দাবী করছি জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশনে।

উল্লেখ্য, বুধবার নতুন দিল্লীর ভারতের রেল মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তর রেল ভবন থেকে মিতালী এক্সপ্রেসের ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেন ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এবং বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। এই উপলক্ষে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে রেলের আধিকারিকদের সাথে উপস্থিত ছিলেন জলপাইগুড়ির সাংসদ ডাঃ জয়ন্ত কুমার রায়।

এই উপলক্ষে ডাঃ জয়ন্ত কুমার রায় তাঁর ফেসবুকে লিখেছেন, “আজ আমার সংসদীয় ক্ষেত্রের এনজেপি রেল স্টেশন থেকে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বিশেষত উত্তরবঙ্গের সাথে বাংলাদেশের রেল যোগাযোগ পুনরায় প্রায় ৫৬ বছর পর চালু হল। এই রেল যোগাযোগ উত্তরবঙ্গের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, আর্থিক ও পর্যটন ক্ষেত্রে বিশাল এক পরিবর্তন আনবে। ঐতিহাসিক এই দিনের সাক্ষী হতে পেরে গর্বিত।”

রেল সূত্রে জানা গেছে, মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনটি নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনের মধ্যে যাতায়াত করবে। এই ৫১৩ কিলোমিটার যেতে যাত্রীদের সময় লাগবে নয় ঘণ্টা। পথে ভারতের হলদিবাড়ি এবং বাংলাদেশের চিলাহাটিতে চালক পরিবর্তনের জন্য ট্রেনটি থামবে। ট্রেনটি নিউ জলপাইগুড়ি থেকে সপ্তাহের বুধবার ও রবিবার এবং ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে সপ্তাহের বৃহস্পতিবার ও সোমবার ছাড়বে।
Photo Credit- Reporter & Dr. Jayanta Kumar Roy official FB page.