জলমগ্ন জলপাইগুড়ি শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ড, উদ্ধারে নামানো হল বোট; তিস্তা নদীর অসংরক্ষিত এলাকায় হলুদ সংকেত

সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি, ২৮ জুন ২০২২ : জলমগ্ন জলপাইগুড়ি শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ড। এক রাতের প্রবল বৃষ্টিতে জল জমেছে জলপাইগুড়ি পুরসভার ইন্দিরা কলোনী নিচ মাঠ এলাকায়। ভোগান্তিতে ওই এলাকার বাসিন্দারা। প্রবল বৃষ্টির কারণে করলা নদীর জল ওই এলাকার বাড়িতে ও রাস্তায় জল জমে যায় বলে দাবি। এর জেরে স্থানীয় বাসিন্দারা সমস্যায় পড়েন এদিন। তরিঘড়ি এলাকার বাসিন্দারা উচুঁ জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে।

এলাকার বাসিন্দা আশা রায় বলেন একটু বৃষ্টিতেই এলাকায় জল জমে কিন্তু গতকালের একনাগারে বৃষ্টির জেরে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে । বাড়িতে ও রাস্তায় জল জমে যায়। বাড়িতে জল জমার ফলে বাঁধের উপর আশ্রয় নিয়েছি বাচ্চাদের নিয়ে।

অন্যদিকে আর এক বাসিন্দা বাসন্তী রায় এবং সন্তোষ রায় বলেন বৃষ্টি হলেই এলাকায় জল দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। আর এতে ভুগতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। বাড়িতে জল ঢুকে গেছে। জলের কারণে রান্না বন্ধ রয়েছে। পরিবারের লোকজন এবং গবাদিপশুদের নিয়ে বাঁধের উপর উঠেছি।

লাগাতার ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে শহরের অধিকাংশ ওয়ার্ড জলমগ্ন। ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের পরেশমিত্র কলোনি, ১নম্বর ওয়ার্ডের করলা পাড়ে জলবন্দি কয়েক’শো মানুষ। জলবন্দি মানুষদের উদ্ধারের কাজে বোট নামানো হল প্রশাসনের তরফ থেকে। মঙ্গলবার দুপুরে পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চাট‍্যাজি জলমগ্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। স্থানীয়দের সমস্যা সরজমিনে খতিয়ে দেখলেন। এদিকে পরেশমিত্র এলাকায় অনেক বাসিন্দা জলবন্দি হয়ে আছেন। খবর পেয়ে সেই এলাকায় পৌঁছায় ভাইস চেয়ারম্যান সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলর পৌষালি দাস ও পুর আধিকারিকরা। ভাইস চেয়ারম্যান নিজেই উদ্ধারকারীদের বোটে লাইফ জ্যাকেট পরে সিভিল ডিফেন্সের সদস্যদের নিয়ে উদ্ধার কাজে নামলেন। জলবন্দি অবস্থায় ঘরে আটকে ছিলেন বয়স্ক থেকে শুরু করে অনেকে। বোটের মাধ্যমে তাদের উদ্ধার করে আনা হল। সকলকে বন্যা দুর্গতদের আশ্রয় কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। সেখানেই পুর কর্তৃপক্ষের তরফে খাবার ব্যবস্থা করা হয়।

তবে জলপাইগুড়ি তিস্তা নদীর জল এখনো বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে না বলে সেচ দপ্তর সূত্রে খবর। এখবর লেখা পর্যন্ত তিস্তা নদীতে অসংরক্ষিত এলাকায় রয়েছে হলুদ সংকেত। জলপাইগুড়ি সেচ দপ্তরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার দেবব্রত দত্ত জানান, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারের থেকে জলপাইগুড়িতে ভাঙ্গনের পরিমাণ অনেক কম। জলের বিভিন্ন অবস্থা জলপাইগুড়িতে লক্ষ্য করা যায়। দেবব্রত বাবু বলেন, তিস্তার আপার ক্যাচমেন্টে অধিক বৃষ্টি না হলে চিন্তার কিছু নেই। করলার জল এখনো নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এক্ষেত্রে এখনো কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয় বলে তিনি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *