সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি, ১৫ জুলাই ২০২২ : “সে তো মন হারিয়েছে” ডুয়ার্সের চা বলয়ের মানুষের দুঃখ দুর্দশা নিয়ে গান বাঁধলেন বানারহাটের চিকিৎসক ডঃ পার্থ প্রতিম। উত্তরবঙ্গের সর্ব বৃহৎ শিল্প বলতে চা শিল্প। এই চা শিল্পের সাথে জড়িত মহিলাদের দুঃখ দুর্দশা গানের মাধ্যমে তুলে ধরে সবার দৃষ্টি আকর্ষন করতেই এই উদ্যোগ।
পার্থ প্রতিমের কথায় ডুয়ার্সের চা বলয় মূলত আদিবাসী অধ্যুষিত। ‘সাদরী’ এই অঞ্চলের অন্যতম কথ্য ভাষা। স্বাধীনতার পরবর্তী কালে এই চা বাগিচা এলাকায় তেমন কোন উল্লেখযোগ্য পুঁজি বিনিয়োগ হয়নি। ফলে চা শিল্পের অনুসারী শিল্প এই এলাকায় গড়ে ওঠে নি। তাই কর্মসংস্থানের সুযোগ সীমিত থেকে সীমিততর হয়েছে। এই চা বলয়ের পুরুষরা রুটি-রুজির আশায় ভিনরাজ্যে পাড়ি দিচ্ছে। সে কারণে মা-এর ওপর চেপে বসছে সাংসারিক দায় দায়িত্ব। ধ্বংস হচ্ছে পারিবারিক ভারসাম্য। মা একদিকে যেমন সংসার চালাতে হচ্ছে অন্যদিকে সংসার সন্ততিতে মানুষ করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। ‘সে তো মন হারিয়েছে’ এই গানটিতে তুলে ধরা হয়েছে তেমনই একটা বেদনার পরিস্থিতি অডিও ভিডিওর মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে’। জলপাইগুড়ির মেয়ে প্রিয়া সেনগুপ্ত গানটি করেছেন। সুর দিয়েছেন দিপঙ্করা সেনগুপ্ত। বানারহাটের ছাত্রী স্থানীয় এক চা বাগানের আদিবাসী মেয়ে শিমরন মুন্ডা বুধনির ভুমিকা পালন করছে ভিডিওটিতে। বুধনির স্বামী রুটি-রুজির তাগিদে পাড়ি দিয়েছে সুদূর দক্ষিণ ভারতে। বুধনি সন্তান সম্ভবা। ইতিমধ্যেই বহু যুগের ওপার হতে- ‘আষাঢ় এলো. . .’। বৃষ্টিধারায় স্নাত হচ্ছে চা বাগিচার সবুজ গালিচা। বরষা বিরহের ঋতু। বুধনি প্রিয়জনের ভাবনায় ভাবায়িত হয়েছে। সে আকুতি মূর্ত হয়েছে এই গানটিতে। শুধুমাত্র চায়ের কাপে চুমুক দিয়েই চা এর স্বাদ নেওয়া যায়।কিন্তু যারা এই চা উৎপাদন করতে দিনরাত এক করে তাদের নিত্যদিনের ভোগান্তি তুলে ধরা হয়েছে এই মিউজিক ভিডিওতে।
এই বিষয়ে বানারহাটের ছাত্রী স্থানীয় এক চা বাগানের আদিবাসী মেয়ে শিমরন মুন্ডা বলেন আমাদের চা বলয়ের চা শ্রমিকদের দুঃখ দুর্দশা আমরা মিউজিক ভিডিওর মাধ্যমে তুলে ধরেছি। মায়েদের যে কী কষ্ট তা তুলে ধরা হয়ছে। যাতে করে সবাই জানতে পারে তারা কি অবস্থায় আছে। এদিন জলপাইগুড়ি প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই মিউজিক ভিডিও প্রকাশ অনুষ্ঠান করা হয়।অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইতিহাসবিদ ডঃ আনন্দ গোপাল গোষ, প্রাবন্ধিক উমেশ শর্মা, বিজয় গোপাল চক্রবর্তী, শীলা দত্ত ঘটকা, বৈভাল দাশগুপ্ত সহ অন্যান্যরা।