সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি, ২৯ সেপ্টেম্বর : জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন ডেঙ্গুয়াঝাড় চা বাগানের জগপুর মাঝলাইনের আইসিডিএস সেন্টার।শিশুদের হাত ধোয়ার বেসিন থেকে রান্না ঘরের ভেতর দিয়ে একটি পাইপ বেরিয়ে গেছে বাইরে। রান্না ঘরের মাটির উনুনের পাশেই ভাঙ্গা সেই পাইপ।পাইপের বাইরে মুখ দিয়ে ভেতরে ঢুকে বসতি গড়ে তুলেছে একটি পূর্ণ বয়স্ক গোখরো সাপ। কখনো উনুনের পাশের ভাঙ্গা অংশ দিয়ে মাথা বের করে দেখে নেন রান্না ঘরের হালহকিকত। কখনো বেসিনের পরিস্থিতি দেখে, লেজ বের করে পাইপের মধ্যে বসে থাকেন গোখরো বাবাজি। এদিকে আইসিডিএস সেন্টারের শিশুদের নিরাপত্তার কথা ভেবে দিদিমণিরা আইসিডিএস সেন্টারের নিজস্ব বিল্ডিং বন্ধ করে পাশের বাড়িতে রান্নার কাজ চালাচ্ছেন। সেই বাড়ি থেকেই প্রতিদিন শিশুদের ও গর্ভবতী মায়েদের খাবার দেওয়া হয়। এত সব কিছুর পরেও গোখরো বাবাজীর হেলদোল নেই।

আজ বৃহস্পতিবার আইসিডিএস সেন্টারের পক্ষ থেকে খবর দেওয়া হয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গ্রীন জলপাইগুড়ির সাপ উদ্ধারকারী দলের সদস্যদের।খবর পেয়ে, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অংকুর দাস ও সহ সভাপতি অমৃত ঘোষ ছুটে যায় এলাকায়। প্রথমে দীর্ঘ চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে গেলে, মাতৃত্বকালীন ছুটিতে থাকা সেন্টারের দিদিমণিকে টেলিফোনে কথা বলে, অনুমতি নিয়ে, পাইপ খুলে গোখরো বাবাজীকে ব্যাগ বন্দি করেন অংকুর দাস। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে দেখা যায় এলাকাবাসীকে। এই প্রসঙ্গে এক চা শ্রমিক বলেন, এই সাপটা মাঝেমধ্যেই জ্বালাতন করছে। সেন্টারের রান্না পাশের বাড়িতে করাতে হচ্ছে। আগামীকাল থেকে আবার সেন্টার খোলা যাবে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অংকুর দাস জানান, আইসিডিএস সেন্টারের পক্ষ থেকে আমাদের কে খবর দেওয়া হলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ছুটে আসি। প্রথমে আমরা চেষ্টা করি, পাইপ না খুলেই, সাপটাকে উদ্ধার করতে। কিন্তু আমরা ব্যর্থ হই। অবশেষে টেলিফোনে সেন্টারের দিদিমনির থেকে অনুমতি নিয়ে পাইপ খুলে সাপটাকে উদ্ধার করি। এটি একটি পূর্ণবয়স্ক গোখরো সাপ। এই সেন্টারে যেহেতু প্রচুর পরিমাণে শিশুরা এবং গর্ভবতী মায়েরা আসেন, সেই ক্ষেত্রে এই সাপটি যদি বেরিয়ে আসতো তাতে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকতো। আগামী কাল থেকে আবারো এখানে পঠনপাঠন থেকে রান্না সব কিছুই করতে পারবেন।