চতুর্থীর সন্ধ্যায় জলপাইগুড়ি শহরে জমে উঠলো নাট্যসন্ধ্যা

সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি, ৩০ সেপ্টেম্বর : বাঙালীর সবথেকে বড় উৎসব দুর্গোৎসব এর মহা চতুর্থীর সন্ধ্যায় (২৯ সেপ্টেম্বর ) জলপাইগুড়ি সৃষ্টি মাইম থিয়েটার ও জলপাইগুড়ি মুক্তাঙ্গন নাট্যগোষ্ঠীর যৌথ উদ্যোগে স্থানীয় রবীন্দ্র ভবন মঞ্চে দুটি নাটক নিয়ে একটি মনোজ্ঞ নাট্য সন্ধ্যা আয়োজিত হলো। প্রদীপ প্রজ্জ্বোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন মুক্তাঙ্গন নাট্যগোষ্ঠীর সভাপতি অলোক সুধীর সরকার, সৃষ্টি মাইম থিয়েটারের সহ সভাপতি সুমন চক্রবর্তী, বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক উমেশ শর্মা, বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী চৈতন্যদেব রায়, জলপাইগুড়ির প্রবীন নাট্য ব্যক্তিত্ব প্রদোষ চৌধুরী, বরুণ ভট্টাচার্য, বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত প্রমুখ।

এরপর শুরু হয় নাট্যানুষ্ঠান। প্রথম দর্শনে ছিলো মুক্তাঙ্গন নাট্য গোষ্ঠী প্রযোজিত রাজবংশী কথ্য উপভাষার নাটক দ্রোহ। রাজবংশী লোকরীতিতে শুখা মরশুমে বৃষ্টি কে আহ্বান জানিয়ে রাতের অন্ধকারে খোলা মাঠে হুদম দেবতার পুজো করা হয়। সাধারণত মহিলারা এই পুজোয় অংশ গ্রহন করেন, এই পুজোয় পুরুষের প্রবেশ নিষেধ, আর পুরুষ প্রবেশ করলে, তাকে প্রাণে মেরে ফেলার ক্ষমতাও ন্যস্ত আছে মহিলাদের ওপর। কিন্তু গ্রামের দরিদ্র পরিবারের ছেলে কাচুয়া তার প্রেমিকা উর্মিমালার উপেক্ষাকে মেনে নিতে না পেরে এই পুজো প্রাঙ্গনে এসে হাজির হয় উর্মির সঙ্গে সাক্ষাৎ এর আশায়। তারপর মহিলাদের ওপর ন্যস্ত ক্ষমতার ব্যবহার কি হবে সেই উত্তেজনাই বয়ে নিয়ে যায় নাটক। অর্ণব মুখোপাধ্যায় রচিত ও রীনা ভারতী নির্দেশিত এই নাট্যে অভিনয় করেন রীনা ভারতী,রনজয় দাস, সংহিতা চন্দ, সুমন্ত রায়, জয়া ভট্টাচার্য্য, নারায়ন মন্ডল, অদিতি ভৌমিক, অরুন সরকার, শ্রেয়া রাউত ও মৌসুমী কুন্ডু, আবহ প্রক্ষেপণ ও প্রযোজনা নিয়ন্ত্রন করে রোহিত মৈত্র ও শুভম কুন্ডু।

On the evening of Chaturthi; Jalpaiguri town was filled with theatrical evening


দ্বিতীয় পর্বে ছিল জলপাইগুড়ি সৃষ্টি মাইম থিয়েটার প্রযোজিত একটি থ্রিলার মূকনাট্য “গোয়েন্দা নিরু গোঁসাই”। একটি খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র ক’রে নাট্যকাহিনি আবর্তিত হয়। গোয়েন্দা নিরু গোঁসাই-এর তৎপরতায় প্রকৃত খুনী ধরা পড়ে ও শাস্তি পায়। আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন মূকাভিনেতা গুরু পদ্মশ্রী নিরঞ্জন গোস্বামী রচিত এই নাট্যের নির্দেশক সব্যসাচী দত্ত। অভিনয় করেন ঝুমা ধর, রুম্পি পাল, মৌসুমী খান, সিমরন মাঝি, সাক্সী ঝাঁ, শেফালী সাহা, মুসকান খান, নিবেদিতা দেবনাথ, অনুরাগ মাঝি ও সুমিত দেবনাথ। দুটি নাটকের আলোক পরিকল্পনা করেন বিশিষ্ট আলোক শিল্পী সুজিত সাহা। মহাচতুর্থীর সন্ধ্যায় পূর্ণ প্রেক্ষাগৃহে অনুষ্ঠিত দুটি নাটকের প্রশংসা করেন উপস্থিত সবাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *