লেখক পঙ্কজ সেন
১৯৫০ সালের ৩১শে আগস্ট জলপাইগুড়ি শহরে প্রসন্নদেব মহিলা মহাবিদ্যালয়টি গড়ে উঠেছিলো। ১৯৫০ থেকে প্রায় ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত জলপাইগুড়ি শহরের ডিবিসি রোডের নূরমঞ্জিল ভবনে সর্বপ্রথম সূচনা হয় পিডি কলেজের। সেখানে কয়েক বছর থাকার পর বর্তমান কমার্স কলেজে চলে আসে পিডি কলেজ। সেখান থেকে স্থানান্তরিত হয়ে বর্তমান ক্লাব রোড এলাকায় স্থায়ীভাবে চলে আসে কলেজটি। জলপাইগুড়ি বৈকুন্ঠপুর রায়কত রাজবংশের সর্বশেষ রাজা প্রসন্নদেব রায়কতের সহধর্মিনী অশ্রুমতি দেবীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এই মহাবিদ্যালয়টি গড়ে উঠেছিলো। তৎকালীন জলপাইগুড়ি হাকিমপাড়ার বিশিষ্ট নাগরিক তথা আইনজীবী ও রায়বাহাদুর বিপুলেন্দ্রনাথ ব্যানার্জি কলেজটি স্থাপনে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন।

রানী অশ্রুমতি দেবী নানাবিধ সংস্কার মূলক কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৯৪৬ সালে রাজা প্রসন্নদেব রায়কতের মৃত্যু হলে অশ্রুমতি দেবী মৃত স্বামীর স্মৃতি রক্ষার্থে ও জলপাইগুড়ি শহরে নারী শিক্ষার প্রচলনের জন্য সওয়া লক্ষ টাকা দান করেন। সেই টাকাতেই গড়ে উঠেছে আজকের জলপাইগুড়ি জেলা তথা শহরের অন্যতম খ্যাতনামা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রসন্নদেব মহিলা মহাবিদ্যালয়। কলেজটির প্রথম অধ্যক্ষা ছিলেন চারুপমা বসু। শুধু স্বামীর জন্য নয়,আসামের রূপসীতে স্বর্গীয় পিতা ভোলানাথ চৌধুরীর স্মৃতি রক্ষাথেও তিনি আসাম সরকারের হাতে পঞ্চাশ হাজার টাকা দান করেন। উক্ত কলেজটির নামকরণ করা হয়েছিলো ভোলানাথ কলেজ।

কলেজ সংলগ্ন এলাকাতেই রয়েছে মহিলা হোস্টেল। হোস্টেলের ভবনটি ইংরেজ আমলের। প্রসন্নদেব মহিলা মহাবিদ্যালয় জলপাইগুড়ি জেলা তথা শহরের অন্যতম পুরনো মহিলা মহাবিদ্যালয়। কলেজটি প্রথমাবস্থায় ছিল বর্তমান কমার্স কলেজ যে ভবনটিতে সেখানে, ডি বি সি রোডে। বর্তমান কলেজটি ১৯৫৫ -৫৬ সালে স্থানান্তরিত হয়। এখান থেকে পাস করা বহু কৃতি ছাত্রী ভারত তথা পৃথিবীর নানা প্রান্তে অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে ছড়িয়ে আছে। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা নিয়ন্ত্রিত প্রসন্নদেব মহিলা মহাবিদ্যালয়টি কলা এবং বিজ্ঞানে স্নাতক কোর্স পরিচালনা করে।

২০২০ সালের মে মাসে এক মিনিটে সাত মিলিমিটার ছোলার ডালে রবীন্দ্রনাথের ছবি এঁকে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস ও ইন্টারন্যাশনাল বুক অফ রেকর্ডস এ নাম উঠেছিলো এই কলেজের ছাত্রী শুভ্রা মন্ডল।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার : উমেশ শর্মা।
ছবি সৌজন্যে গুগুল