জলপাইগুড়ি : তিন দিন নিখোঁজ ছিলেন, কেউ জানত না—একই আবাসনে থাকলেও এতটা দূরত্ব তৈরি হয়ে গিয়েছিল। মঙ্গলবার দুপুরে জলপাইগুড়ি শহরের মিউনিসিপ্যাল মার্কেট সংলগ্ন একটি বহুতল থেকে উদ্ধার হল ৫৬ বছরের উজ্জ্বল বণিক ওরফে বাচ্চুর ঝুলন্ত মৃতদেহ। নিজস্ব ফ্ল্যাটেই নিঃসঙ্গ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিলেন তিনি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই আবাসনের জমিটি তাঁদের পারিবারিক সম্পত্তি। উজ্জ্বলবাবুর একটি ছোট পানের দোকান ছিল, সেখানেই কাটত তাঁর দিন। বিয়ে করেননি, থাকতেন একাই। অথচ আশপাশেই থাকেন তাঁর ভাই-বোনেরা। তা সত্ত্বেও কীভাবে এমন নিঃসঙ্গ পরিণতি?—এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে প্রতিবেশীদের মনে।

খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন উজ্জ্বলবাবুর দাদা। চোখের জল মুছে বলেন, “ছোটবেলায় বাবা চলে গিয়েছিল, ওদের মানুষ করেছি, ও সংসারের খরচ চাইত না—আমি দিতাম। ভাবিনি এমন পরিণতি হবে।”
প্রতিবেশীরা জানান, “আমরাও ভালোভাবে চিনতাম। নিঃশব্দে বেঁচে থাকতেন। কারও সাথে বিরোধ ছিল না। তবে একা থাকার যন্ত্রণা বুঝতে পারিনি কেউই।”

ঘটনার খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানার পুলিশ ফ্ল্যাটে পৌঁছায়। ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় দেহ, ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
এই ঘটনা শুধুই একটি আত্মহত্যা নয়—এ যেন এক নিঃসঙ্গতার অজানা আর্তি, যা ব্যস্ত শহুরে জীবনের ভিতর চাপা পড়ে যায়।