জলপাইগুড়ির চা-বাগানে ‘টি টুরিজম’-এর নতুন স্বপ্ন, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে রূপরেখা তৈরির পথে

জলপাইগুড়ি : শুধু চায়ের পাতা নয়, এবার চা-বাগান থেকে উঠে আসতে চলেছে নতুন সম্ভাবনার সুবাস—‘টি টুরিজম’। মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি সদর মহকুমা শাসকের দপ্তরে এই বিষয়কে কেন্দ্র করে আয়োজিত হল এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘টি টুরিজম’-কেন্দ্রিক ভাবনার বাস্তব রূপ দিতে এই বৈঠক ছিল তাৎপর্যপূর্ণ।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সদর মহকুমা শাসক তমোজিৎ চক্রবর্তী, জেলার বিভিন্ন চা বাগান সংস্থা ও বণিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। আলোচনায় উঠে আসে—চা-বাগানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহ্য ও উৎপাদন প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে কীভাবে পর্যটন পরিকাঠামো গড়ে তোলা যায় এবং স্থানীয় মানুষের জন্য কর্মসংস্থানের পথ তৈরি করা যায়।

“আমাদের লক্ষ্য একটি টেকসই ও অংশীদারিত্বভিত্তিক মডেল গড়ে তোলা, যেখানে সরকার ও চা-বাগান মালিকপক্ষ হাতে হাত রেখে কাজ করবে। জলপাইগুড়ির চা-বাগানগুলি শুধু উৎপাদনের কেন্দ্র নয়, ভবিষ্যতের পর্যটন হাব হয়ে উঠতে পারে, এতে এলাকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হবে।” — বলেন মহকুমা শাসক তমোজিৎ চক্রবর্তী।

চা চাষী বিজয় গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “চা তো আমরা চিরকাল চাষ করছি, কিন্তু যদি পর্যটকরা এসে চায়ের ইতিহাস, চাষ প্রক্রিয়া আর আমাদের জীবন দেখেন—তাতে শুধু চা নয়, আমাদের সংস্কৃতি, জীবনযাপনও গুরুত্ব পাবে। আমাদের ছেলেমেয়েরাও নতুন কাজের সুযোগ পাবে।”

বৈঠকে হোমস্টে সংস্কৃতির প্রসার, স্থানীয় হস্তশিল্পের বাজার সৃষ্টি, পর্যটকের অভিজ্ঞতা উন্নয়ন—এই দিকগুলিকেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়।

জেলার প্রশাসনিক মহল মনে করছে, এই উদ্যোগ সফল হলে জলপাইগুড়ি রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে একটি আলাদা পরিচয় পাবে। শুধু চায়ের কাপ নয়, এ বার চা-বাগানের গল্প নিয়েই ভরে উঠবে পর্যটকদের ভ্রমণ ডায়রি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *