জলপাইগুড়ি, ১৯ ফেব্রুয়ারি: জলপাইগুড়ি জেলার ক্রান্তি ব্লকের কোদালকাঠি গ্রামের সালমারি ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে গেল পরিযায়ী শ্রমিক সফিয়ার রহমান ও তার স্ত্রী সাফিয়া খাতুনের বাড়ি। এক মুহূর্তে আশ্রয়হীন হয়ে পড়লেন তারা।
জানা গেছে, সফিয়ার রহমান বর্তমানে কেরালায় কর্মরত। তার স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে গ্রামে বসবাস করেন। হঠাৎই বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে বাড়িতে আগুন ধরে যায়, মুহূর্তের মধ্যে তিনটি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। পরিবারের সব প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, আসবাবপত্র এবং মূল্যবান সামগ্রী ধ্বংস হয়ে গেছে।
এখানেই শেষ নয়, মাত্র তিন দিন পর পরিবারের এক সদস্যের বিয়ে ছিল। সেই উপলক্ষে রাখা গয়না ও অন্যান্য সামগ্রীও আগুনের গ্রাসে বিলীন হয়ে গেছে। এ ঘটনায় ভেঙে পড়েছেন সাফিয়া খাতুন। অগ্নিকাণ্ডের ধাক্কায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। দ্রুত তাকে ক্রান্তি পুলিশ ফাঁড়ির আধিকারিকরা হাসপাতালে নিয়ে যান, বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন।
আগুন ছড়িয়ে পড়ার আগেই প্রতিবেশীদের চেষ্টায় পার্শ্ববর্তী বাড়িগুলো রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা শরিফুল হক নিরলসভাবে আগুন নেভানোর কাজে সাহায্য করেন, যার ফলে আশেপাশের ঘরগুলো ক্ষতির হাত থেকে বাঁচে।
ঘটনার খবর পেয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন বিশিষ্ট সমাজসেবী মহাদেব রায়, রাজাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সঞ্জয় উড়াও, উপপ্রধান মিন্টু রায় এবং চেঙ্গমারি অঞ্চলের প্রধান আব্দুল সামাদ। তারা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে ত্রাণ সহায়তা প্রদান করেছেন এবং প্রশাসনিকভাবে আরও সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
এই মর্মান্তিক ঘটনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের একজন হলেন বাড়ির এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। তার সব বই-খাতা আগুনে পুড়ে গেছে, অথচ পরীক্ষার দুটি বিষয় এখনো বাকি। উপপ্রধান মিন্টু রায় সেই পরীক্ষার্থীর জন্য নতুন বইয়ের ব্যবস্থা করবেন বলে জানিয়েছেন।
এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় এলাকাজুড়ে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সাহায্য করার আবেদন জানিয়েছেন প্রশাসনের কাছে। আপাতত অসহায় পরিবারটি সরকারি সহায়তার অপেক্ষায় দিন গুনছে।