বিকাশ সরকার, ৩১ মে : জলপাইগুড়ির বোয়ালমারী নন্দনপুর অঞ্চলের তিস্তা নদীর চরে আচমকাই মেলে আধার কার্ড, পাসপোর্ট সাইজের ছবি ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র। শুক্রবার সকালে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়তেই কৌতূহল ও উদ্বেগ ছড়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে।

প্রসন্ন নগর পাড়ার বাসিন্দা সৌরভ সরকার প্রতিদিনের মতোই তাঁর গরু নিয়ে যান ৫ নম্বর স্পার এলাকার চরে। সেখানেই আচমকা চোখে পড়ে একটি ক্যারি ব্যাগ, যা নদীর জলধারায় ভেসে এসে কাদায় আটকে ছিল। ব্যাগটি খুলতেই দেখা যায়, তার ভিতরে রয়েছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথি—একটি আধার কার্ড, পাসপোর্ট সাইজের ছবি, খাতা ও কিছু পরিচয় সম্পর্কিত কাগজপত্র।

সৌরভ জানান, “আমি গরু বাঁধতে গিয়ে দেখি, তিস্তার জল থেকে একটা ব্যাগ এসে পড়েছে চরে। খুলে দেখি ভিতরে কারোর আধার কার্ড, ছবি ও আরও কিছু দরকারি জিনিস রয়েছে। তখনই ভাবলাম, কেউ নিশ্চয় হারিয়ে ফেলেছেন বা কোনওভাবে এটা নদীতে পড়ে গেছে। তাই যত্ন করে বাড়িতে নিয়ে এসেছি। যদি ওই ব্যক্তিকে পাওয়া যায়, তাহলে আমি নিজে হাতে ওনার জিনিসগুলো ফিরিয়ে দেব।”

সৌরভের কথায় জানা গিয়েছে, আধার কার্ডে নাম রয়েছে বিশ্বজিৎ মহন্ত, ঠিকানা উল্লেখ রয়েছে কোচবিহারের দক্ষিণ নবাবগঞ্জ, বালাসী, দেওয়ানহাট। কিন্তু কীভাবে এই নথিপত্র তিস্তার জলে ভেসে এল, তা নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। সৌরভের মানবিক পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
প্রসন্ন নগর পাড়ার এক প্রবীণ বাসিন্দা বলেন, “এত গুরুত্বপূর্ণ জিনিস যদি কোনোভাবে হারিয়ে যায়, তাহলে সেটা ফেরত পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। সৌরভ যা করেছে, সেটা সত্যিই প্রশংসনীয়। আমরা চাই, ওই ব্যক্তি যেন দ্রুত তাঁর জিনিসপত্র ফেরত পান।”
তিস্তার মতো দুরন্ত নদীর বুকে ভেসে আসা এই কাগজপত্র শুধুমাত্র একটুখানি সতর্কতা ও সদিচ্ছার কারণে আজ নিরাপদে রয়েছে। সৌরভের মতো যুবকের হাতে। এখন শুধু অপেক্ষা—আধার কার্ডের সেই মালিক ঠিক কোথায়, এবং কীভাবে এই গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র তাঁর হাতে পৌঁছাবে। জেলা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হোক, যাতে নথিগুলোর প্রকৃত মালিক নিজের পরিচয় প্রমাণ করে তা ফেরত পেতে পারেন।