ভয়ানক পরিস্থিতির সম্মুখীন উত্তরের প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষ

সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি, ৬ জুন ২০২৩ : দাবদাহ এবং বৃষ্টির অভাবকে হাতিয়ার করে উত্তরের ক্ষুদ্র চা বাগানে হামলা লুপার পোকার। প্রখর রোদে ঝলসে গেছে সবুজ গালিচা। মিলছে না কাঁচা পাতার দাম, ক্ষতির মুখে আড়াই লক্ষ মানুষ।

বৈশাখ মাস থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বৃষ্টি। জৈষ্ঠ্য মাসে এই প্রথম উত্তরের জেলাগুলোতে জারি হয়েছে তাপপ্রবাহের সতর্কতা। এমন অবস্থায় চরম সংকটের মুখে পড়েছে জলপাইগুড়ি সহ বিভিন্ন জেলার ক্ষুদ্র চা বাগানের সঙ্গে জড়িত লক্ষ লক্ষ মানুষ।

মঙ্গলবার ক্ষুদ্র চা চাষিদের সমস্যা নিয়ে বৈঠকে বসল জলপাইগুড়ি ভারতীয় চা পর্ষদ। এ দিনের বৈঠকে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং, উত্তর দিনাজপুর, কোচবিহারের ক্ষুদ্র চা চাষি সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। ক্ষুদ্র চা চাষি সংগঠনের দাবি, চা বাগানের প্রত্যেক গাছে লুপারের থাবা বসেছে। লুপারের অত্যচারে অতিষ্ঠ চা চাষিরা। এমনভাবে লুপার থাবা বসিয়েছে ওষুধ দিলেও কাজ হচ্ছে না। অন্যদিকে কাঁচা চা পাতার উৎপাদন কমলে অর্থনৈতিক বাজারে কাঁচা পাতার দাম বৃদ্ধি হওয়া দরকার। কিন্তু সেই ক্ষেত্রে চা পাতার দাম বাড়ছে না বলে অভিযোগ ক্ষুদ্র চা চাষিদের। জলপাইগুড়ি জেলার ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিজয় গোপাল চক্রবর্তী বলেন,”এক কেজি চা পাতা উৎপাদন করতে খরচ হয় ২০-২২ টাকা। কিন্তু খরচও উঠছে না। এই খরা পরিস্থিতি থাকলে চা গাছ বাঁচানো যাবে না। এই পরিস্থিতিতে চা পর্ষদের কাছে আমরা দাবি জানাচ্ছি অনুদান কিংবা আলাদা প্যাকেজ করা হোক।”

ক্ষুদ্র চা চাষীদের সংগঠণের সম্পাদক অজয় হরি ভৌমিক জানান, এবারে এমন অবস্থার শিকার হয়েছি আমরা যার ফলে বাগান বন্ধ করে দেওয়ার পথে যেতে বাধ্য হচ্ছি। একদিকে বৃষ্টি নেই, এই সুযোগে চা বাগানে হামলা চালিয়েছে রোগ পোকা লুপার। যেটুকু পাতা গাছে আসছে সেটি তুলে ফেলার আগেই খেয়ে ঝাঁঝরা করে দিচ্ছে লুপার।
তার ওপর অর্থনীতির ডিমান্ড থিয়োরিও কাজে লাগছে না, চা পাতার উৎপাদন কম হলেও বাড়েনি কাঁচা চা পাতার দাম।

সব মিলিয়ে এক ভয়ানক পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে প্রায় পঞ্চাশ হাজার ক্ষুদ্র চা বাগানে সঙ্গে যুক্ত প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *