সংবাদ প্রতিবেদন, জলপাইগুড়ি, ২৭ মে : ডুয়ার্সের মাটিয়ালি ব্লকের জুরন্তি চা বাগানে মঙ্গলবার সকালে ধরা পড়ল এক পূর্ণবয়স্ক চিতাবাঘ। ১৯ নম্বর সেকশনে বনদপ্তরের পাতানো খাঁচায় বন্দি হয় চিতাবাঘটি।

সকালের শান্ত পরিবেশ আচমকা ভেঙে যায় গর্জনে। স্থানীয়রা প্রথমে শব্দ শুনতে পান, এরপর কাছে গিয়ে চমকে ওঠেন—একটি বিশাল চিতাবাঘ খাঁচার ভেতরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। মুহূর্তে এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে খবর। ভিড় জমে যায় চা বাগানে।

খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বনদপ্তরের খুনিয়া স্কোয়াড। বনকর্মীরা সতর্কতার সঙ্গে চিতাবাঘটি উদ্ধার করে নিয়ে যান। জানা গেছে, স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর যদি চিতাবাঘটি সুস্থ থাকে, তবে তাকে গরুমারা জঙ্গলে মুক্ত করে দেওয়া হবে।
স্থানীয়দের স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার কারণও রয়েছে। গত কয়েকদিন ধরেই ওই অঞ্চলে চিতাবাঘের ত্রাস চলছিল। সন্ধ্যা নামলেই চিতাবাঘ ঢুকে পড়ছিল লোকালয়ে—ছাগল, শুকর তুলে নিয়ে যাচ্ছিল। একপ্রকার আতঙ্কে সন্ধ্যার পর দরজা-জানালা বন্ধ করে থাকতেন বাসিন্দারা।
এই পরিস্থিতিতে বনদপ্তরের পক্ষ থেকে প্রায় এক সপ্তাহ আগে এলাকাটিতে খাঁচা পাতা হয়। অবশেষে এদিন চিতাবাঘ ধরা পড়ায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে গ্রামবাসীদের মধ্যে।
স্থানীয় এক বৃদ্ধ বলেন, “প্রতিদিন ভাবতাম আজকে হয়তো কারো না কারো গরু বা ছাগল নিয়ে যাবে। আজকে চিতাবাঘ ধরা পড়েছে শুনে মনে হচ্ছে একটু নিশ্চিন্ত থাকা যাবে।”
প্রকৃতির রাজ্যে মানব-প্রাণীর সহাবস্থান চিরকালীন বাস্তবতা হলেও, যখন সেই সহাবস্থান ভয়ের রূপ নেয়, তখন প্রয়োজন হয় এমন সতর্ক ও মানবিক পদক্ষেপের। বনদপ্তরের এই উদ্যোগ তাই প্রশংসা পাচ্ছে বিভিন্ন মহলে।