সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি, ১২ ফেব্রুয়ারি’২৪ : জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে এক রোগীর পরিবারের সদস্যদের সাথে খারাপ ব্যবহার এবং মারধোর করার অভিযোগ উঠল কর্তব্যরত চিকিৎসক ও সিকিউরিটি গার্ডদের বিরুদ্ধে। সেইসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক অপ্রকৃতস্থ অবস্থায় ছিলেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

উল্লেখ্য, ধূপগুড়ি জলঢাকা এলাকার বাসিন্দা দুখাই সরকার রবিবার রাতে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে তাঁকে ধূপগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা রোগীকে জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার করে দেয়। এরপর পরিবারের লোকেরা রবিবার ভোর রাতে জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে আসেন রোগীকে। জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসকের কাছে রোগীকে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা।

দুখাইবাবুর স্ত্রী দীপালি সরকারের অভিযোগ, ওই সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগীকে না পরীক্ষা করেই প্রেসক্রিপশন লিখতে শুরু করেন। লিখতে লিখতে প্রেসক্রিপশনের বাইরে লিখতে থাকেন। রোগীর বাড়ির লোক ঠিক করে লেখার অনুরোধ করায় চিকিৎসক সিকিউরিটি গার্ডদের ডাক দেন তাদেরকে বাইরে বার করে দেওয়ার জন্য।দুখাইবাবুর স্ত্রী আরো বলেন, “সিকিউরিটি গার্ডরা এসে আমাদের ধরে টানাটানি শুরু করে। টানাটানিতে তাঁর শাড়ি ছিঁড়ে যায়। তার ছেলেদের মারধর করা হয় এবং তাদের একটা ঘরে আটকে রাখা হয়।

সোমবার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গ্রীন জলপাইগুড়ির সাথে যোগাযোগ করেন দুখাইবাবুর পরিবারের সদস্যরা৷ এরপর স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অঙ্কুর দাসের সাথে দুখাইবাবুর পরিবারের সদস্যরা সোমবার দুপুরে জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেই সময় হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন না এমএসভিপি। তাই তারা অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার মলয় দে’র সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ জমা করেন।

এ ঘটনা প্রসঙ্গে অঙ্কুর দাস জানান, রবিবার ভোর রাতে ধুপগুড়ির এক পরিবার রোগীকে নিয়ে জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসে। সেই সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক মনে হচ্ছে তিনি অপ্রকৃতস্থ অবস্থায় ছিলেন। অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছিলেন এবং লিখতে গিয়ে কাগজের বাইরে অন্য কাগজে লিখেছিলেন। রোগীর বাড়ির লোকেরা যখন তাকে
ভালো করে লিখতে অনুরোধ করে তখন তিনি সিকিউরিটি গার্ডদের ডাক দিয়ে এদের বের করে দিতে বলেন। এরপর সিকিউরিটি গার্ডরা রোগীর দুই ছেলে এবং রোগীর স্ত্রীকে মারধোর করে একটা ঘরে আটকে রাখা হয়। রোগীর স্ত্রীর শাড়ি ধরে টানাটানি করা হয় এবং তার শাড়ি ছিঁড়ে যায়। এই ঘটনার প্রতিবাদে আজ MSVP এর কাছে লিখিত অভিযোগ জানানো হল। ২৪ ঘন্টার মধ্যে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে কোতয়ালী থানায় অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি অনশনে বসার কথা জানান অঙ্কুর বাবু।

অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার মলয় দে জানিয়েছেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। পুরো ঘটনার তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।