শিলিগুড়ি, ১১ জুন: ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটল শিলিগুড়ির আশিঘড়ে। বুধবার দুপুরে ৭৫ বছর বয়সী এক বৃদ্ধা কুয়োতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তবে সময়মতো খবর পেয়ে দমকল ও পুলিশ এসে তাঁকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
ঘটনাটি ঘটেছে ভক্তিনগর থানার আশিঘড় আউটপোস্টের শ্রীমা সরণি এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বৃদ্ধার নাম জোছনা বসাক। পরিবার সূত্রে খবর, বেশ কিছুদিন ধরেই পারিবারিক অশান্তিতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। মাত্র দু’দিন আগেই গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন, সেবার পরিবারের সদস্যরা রক্ষা করেন।

দুপুর একটা নাগাদ, বাড়িতে তেমন কেউ না থাকায়, চিত্তবিক্ষিপ্ত অবস্থায় কুয়োতে ঝাঁপ দেন বৃদ্ধা। তবে ঠিক সেই মুহূর্তে তাঁর মেয়ে মুক্তি বসাক ঘটনাটি দেখে চিৎকার করে উঠলে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন।
কিন্তু স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হন। খবর দেওয়া হয় দমকল ও আশিঘড় আউটপোস্টের পুলিশকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকল বাহিনী এবং যৌথভাবে দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর বৃদ্ধাকে কুয়ো থেকে তোলা হয়।

দমকল কর্মী অপূর্ব কুমার দাস বলেন, “কুয়োর গভীরতা এবং বৃদ্ধার বয়সজনিত কারণে উদ্ধার কঠিন ছিল, তবে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আমরা চেষ্টা করি এবং সফল হই।”
বৃদ্ধাকে তড়িঘড়ি শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, প্রাণের ঝুঁকি আপাতত নেই তবে মানসিকভাবে তিনি বিপর্যস্ত।

বৃদ্ধার মেয়ে মুক্তি বসাক জানান, “মা দীর্ঘদিন ধরেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। আমরা চেষ্টা করছিলাম, কিন্তু আজকের ঘটনায় আমরা সবাই খুব ভেঙে পড়েছি।”
এই ঘটনার পর এলাকার মানুষজন আরও বেশি মনোযোগী হচ্ছেন প্রবীণদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে। প্রশাসনের তরফেও বার্তা— “মানসিক চাপের সমস্যা নিয়ে সমাজকে আরও সংবেদনশীল হতে হবে।”
কুয়োর জলের অতল থেকেও ফিরে এলেন জোছনা বসাক— হয়তো সময় মতো হাত বাড়িয়ে দেওয়া মনুষ্যত্বের পক্ষেই এক নিঃশব্দ জয়।