জলপাইগুড়ি : ডুয়ার্সের পর্যটন শিল্পকে আরও সমৃদ্ধ করতে জলপাইগুড়ির লাটাগুড়িতে শুরু হয়েছে “এশিয়ান ফোক ফেস্ট ২০২৪”। গতকাল, ২৪ ডিসেম্বর, এই মনোমুগ্ধকর উৎসবের সূচনা হয় লাটাগুড়ি মেলা প্রাঙ্গণে। উৎসবটি চলবে আগামী ১ জানুয়ারি, ২০২৫ পর্যন্ত। স্থানীয় সংস্কৃতি এবং কৃষ্টিকে বিশ্ব দরবারে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে লাটাগুড়ি রিসোর্ট ওনার্স এন্ড ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
এই উৎসবে ভারত, ভূটান এবং বাংলাদেশের শিল্পীদের পাশাপাশি সিকিম, আসাম ও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার শিল্পীরা অংশগ্রহণ করছেন। ডুয়ার্সের ২৬টি জনজাতি তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও ঐতিহ্য তুলে ধরছেন এই মঞ্চে।
উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ স্থানীয় লোকনৃত্য, সঙ্গীত এবং বিভিন্ন জনজাতির ঐতিহ্যবাহী শিল্প প্রদর্শনী। আয়োজকদের মতে, এই আয়োজনের মাধ্যমে ডুয়ার্সের সংস্কৃতি দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে তুলে ধরা হবে। পাশাপাশি, এই অঞ্চলের পর্যটনশিল্পে নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে যাবে।
জলপাইগুড়ির জেলাশাসক শামা পারভিন বলেন, “এশিয়ান ফোক ফেস্ট শুধু একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নয়, এটি ডুয়ার্সের পর্যটন শিল্পের বিকাশে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। আমরা আশা করছি, এই উৎসব আন্তর্জাতিক পর্যটকদেরও আকর্ষণ করবে।”
জেলা পুলিশ সুপার খান্ডবাহালে উমেশ গনপত বলেন, “আমরা এই উৎসবের জন্য প্রয়োজনীয় সবরকম নিরাপত্তা ও সহযোগিতা প্রদান করছি। পর্যটকদের সুরক্ষায় আমরা সবসময় তৎপর।”
লাটাগুড়ি রিসোর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের জেনারেল সেক্রেটারি দিব্যেন্দু দেব বলেন, “আমাদের মূল লক্ষ্য ডুয়ার্সের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরা। এই উৎসবের মাধ্যমে আমরা পর্যটকদের একটি নতুন অভিজ্ঞতা দিতে চাই।”
অস্ট্রেলিয়া থেকে আগত এক পর্যটক জানান, “এই ধরনের উৎসব আমার কাছে নতুন অভিজ্ঞতা। স্থানীয় সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে এত কাছ থেকে দেখতে পারা সত্যিই অসাধারণ। ডুয়ার্সের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং এখানকার সংস্কৃতির মধ্যে একটি মায়াবী মেলবন্ধন রয়েছে।”
এই উৎসব শুধু একটি বিনোদনের মঞ্চ নয়, বরং এটি ডুয়ার্সের পর্যটন ও অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার এক দৃষ্টান্ত। স্থানীয় জনগণের সঙ্গে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের সংযোগ গড়ে তোলার জন্য এশিয়ান ফোক ফেস্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
ডুয়ার্সের সংস্কৃতি ও পর্যটনের এই অপূর্ব মেলবন্ধন দেখতে লাটাগুড়ি মেলা প্রাঙ্গণে ভিড় জমাচ্ছেন পর্যটকরা। অনুষ্ঠানটি নিঃসন্দেহে ডুয়ার্সের পর্যটন শিল্পকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে।