জলপাইগুড়ি, ১৫ জুনঃ ময়নাগুড়ির বৌলবাড়িতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের এটিএম লুটের ঘটনায় রুদ্ধশ্বাস অভিযান শেষে অবশেষে পুলিশ ও বনদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে ধরা পড়লো দুই দুষ্কৃতী। রবিবার আদালতে পেশ করা হলে আদালত তাদের ১০ দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেছে।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গলে ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ড্রোন-সহ তল্লাশি চালায় জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ, শিলিগুড়ি কমিশনারেট এবং বৈকুণ্ঠপুর ফরেস্ট ডিভিশন। স্থানীয়দের সহায়তায় ধরা পড়ে দুই অভিযুক্ত— বিহারের মোঃ সামসের খান এবং হরিয়ানার আসলুপ খান। তাদের কাছ থেকে ১৫ লক্ষাধিক টাকা সহ দুটি ব্যাগ উদ্ধার হয়।

তবে এখনও তিন অভিযুক্ত পলাতক, তাঁদের সন্ধানে চলছে জঙ্গলজুড়ে চিরুনি তল্লাশি। শনিবার রাতের প্রবল বৃষ্টিতে কিছু সময়ের জন্য তল্লাশি থমকে গেলেও, রবিবার সকাল থেকে অভিযান আবারও শুরু হয়েছে। পুলিশ সুপার উমেশ গনপত খন্ডবহালে জানিয়েছেন, “তল্লাশি অভিযান জারি রয়েছে, দুষ্কৃতীদের খোঁজে কড়া নজর রাখা হচ্ছে।”
উল্লেখ্য, শুক্রবার রাতের অন্ধকারে ময়নাগুড়ির বৌলবাড়ি বাজারসংলগ্ন একটি ব্যাংকের এটিএম থেকে প্রায় ৫৪ লক্ষ টাকা লুট করে পালায় দুষ্কৃতীরা। গ্যাস কাটার দিয়ে এটিএম ভেঙে টাকা তুলে তারা গজলডোবার গেটবাজার হয়ে ঢুকে পড়ে বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গলে। পালানোর সময় ব্যবহার করা হয় একটি সাদা রঙের চারচাকা গাড়ি, যার নম্বরপ্লেট ছিল ভুয়ো।
পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, উদ্ধার হওয়া গাড়িটি এখন তদন্তের অংশ। অপরাধীরা পালানোর সময় সেটি ফেলে রেখে যায়। বর্তমানে জঙ্গলের প্রত্যন্ত অংশে ড্রোন ব্যবহার করে তল্লাশি চালাচ্ছে নিরাপত্তাবাহিনী।
এই চাঞ্চল্যকর ঘটনার তদন্তে প্রশাসন এখন উচ্চ সতর্কতায়, এবং নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে গোটা এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুরোধ করা হয়েছে যে কোনও সন্দেহজনক গতিবিধি সম্পর্কে পুলিশকে অবহিত করতে।
এটিএম লুট, জঙ্গল, গ্যাস কাটার, ড্রোন—সব মিলে জলপাইগুড়ির বৈকুণ্ঠপুর পরিণত হয়েছে এক রুদ্ধশ্বাস থ্রিলারের মঞ্চে।