জলপাইগুড়ি: চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের প্রতিপদ তিথিতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে এক বিশেষ উৎসবের সূচনা হয়— চৈত্র নবরাত্রি। বাংলায় যা পরিচিত বাসন্তী পূজা নামে। শারদীয় দুর্গোৎসবের মতোই এই সময় মা দুর্গার নয়টি রূপের আরাধনা করা হয়। আর এই পুজোর এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ নবপত্রিকা স্নান।

‘নবপত্রিকা’ শব্দের অর্থ নয়টি গাছের পত্র বা পাতা। তবে, বাসন্তী পূজায় শুধু নয়টি পাতা নয়, বরং পূজিত হয় নয়টি বিশেষ উদ্ভিদ। এই উদ্ভিদগুলির মধ্যে রয়েছে—
✅ কদলী (কলা গাছ)
✅ কচু
✅ হরিদ্রা (হলুদ গাছ)
✅ জয়ন্তী
✅ বিল্ব (বেল গাছ)
✅ দাড়িম্ব (ডালিম গাছ)
✅ অশোক গাছ
✅ মানকচু
✅ ধান
সংস্কৃত শাস্ত্রে একে একত্রে বলা হয়— “রম্ভা কচ্চী হরিদ্রাচ জয়ন্তী বিল্ব দাড়িমৌ। অশোক মানকশ্চৈব ধান্যঞ্চ নবপত্রিকা।”
এই নবপত্রিকাকে গঙ্গা বা পবিত্র জলাধারে স্নান করিয়ে মায়ের শক্তিরূপ হিসেবে পূজায় স্থাপন করা হয়।
জলপাইগুড়ির অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী কালীবাড়ি সেনপাড়া আদি কালী বাড়ির সার্বজনীন বাসন্তী পূজা এ বছর ১৮তম বর্ষে পদার্পণ করল। বৃহস্পতিবার ধুমধাম করে প্রতিমা আনার পর আজ সপ্তমীর দিন নবপত্রিকা স্নানের মাধ্যমে পূজার সূচনা করা হয়।
পূজা কমিটির এক সদস্যা জানান, “প্রতিবছর আমরা ষষ্ঠীর দিন প্রতিমা নিয়ে আসি, এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। নবপত্রিকা স্নানের মাধ্যমে পূজার সূচনা হয়। এই পূজাকে ঘিরে আমাদের এলাকাবাসীর মধ্যে বিপুল উন্মাদনা থাকে।”
এবারের পূজায় স্থানীয়দের পাশাপাশি ভক্তদের ঢল নেমেছে। পূজামণ্ডপে আলোর ঝলকানি, ধুনুচি নাচ, মায়ের আরাধনা আর মহাপ্রসাদ বিতরণকে ঘিরে জলপাইগুড়িতে সত্যিকারের উৎসবের আবহ তৈরি হয়েছে।
🔹 আপনি কি কখনো নবপত্রিকা স্নানে অংশ নিয়েছেন? আপনার মতামত আমাদের কমেন্টে জানান!