মল্লিকপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর : ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ফের উত্তেজনা ছড়াল। পাচার রুখতে গিয়ে বিএসএফ ও পাচারকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল দক্ষিণ দিনাজপুরের মল্লিকপুর সীমান্ত এলাকা। বিএসএফের গুলিতে আহত এক বাংলাদেশি পাচারকারী, অন্যদিকে পাচারকারীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত এক বিএসএফ জওয়ান।

ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর ব্লকের মল্লিকপুর সীমান্তে। বিএসএফ সূত্রে জানা গেছে, সীমান্ত পেরিয়ে পাচারের উদ্দেশ্যে পাঁচজন সশস্ত্র বাংলাদেশি ভারতীয় এলাকায় প্রবেশ করে। সেই সময় ৯১ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের জওয়ান ওরফেজ কুমার তাদের বাধা দিতে গেলে পাচারকারীরা হঠাৎই হামলা চালায়।
পাচারকারীরা শুধু বিএসএফ জওয়ানকে আক্রমণই করেনি, বরং তার রাইফেল ছিনিয়ে নেওয়ারও চেষ্টা করে। আত্মরক্ষার্থে বিএসএফ পাল্টা গুলি চালালে মহম্মদ আলাউদ্দিন (৩২) নামে এক বাংলাদেশি পাচারকারী গুলিবিদ্ধ হন, তবে বাকিরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। অপরদিকে, বিএসএফ জওয়ান ওরফেজ কুমারও গুরুতর আহত হন।

এই ঘটনার পর আহতদের দ্রুত গঙ্গারামপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাদের চিকিৎসা চলছে। বিএসএফ জওয়ানের অবস্থা আশঙ্কাজনক হলেও তিনি বিপদমুক্ত বলে জানা গেছে।
এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। জানা গেছে, সুখদেবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মল্লিকপুর সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া বসানোর কাজ চলছে। আর সেই সুযোগ নিয়েই পাচারের চেষ্টা করছিল দুষ্কৃতীরা। কিছুদিন আগেও এই সীমান্ত দিয়ে গরু পাচারের ঘটনা ধরা পড়েছিল এবং বিএসএফ পাঁচটি গরু উদ্ধার করেছিল।
ঘটনার খবর পেয়ে গঙ্গারামপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে। যদিও বিএসএফের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো সরকারি প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
সীমান্তবর্তী এলাকাবাসীদের মতে, সীমান্তে নিরাপত্তা আরও কঠোর করা প্রয়োজন। পাচারকারীরা প্রায়ই এই এলাকায় সক্রিয় থাকে, যা ভবিষ্যতে আরও বড় বিপদের কারণ হতে পারে। এই ঘটনার পর বিএসএফ সীমান্ত নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
সীমান্তে এই ধরনের সংঘর্ষ বারবার প্রমাণ করছে যে পাচার রুখতে আরও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। বিএসএফ তাদের কর্তব্য পালন করলেও, পাচারকারীরা প্রতিবারই নতুন নতুন কৌশল নিয়ে আসছে। এবার দেখার, সীমান্ত নিরাপত্তা আরও কীভাবে জোরদার করা হয়!