ময়নাগুড়ি : জলঢাকা নদীর বাঁধভাঙা দুঃস্বপ্ন এখনও কাটেনি ময়নাগুড়ির আমগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বেদগাড়া এলাকায়। অবিরাম বৃষ্টির জেরে গত রবিবার সকালে নদীর অন্তত তিনটি স্থানে বাঁধ ভেঙে মুহূর্তে প্লাবিত হয় আশপাশের গ্রামগুলি। সবচেয়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তারারবাড়ি অঞ্চলে — যেখানে প্রায় ৫০ মিটার বাঁধ ভেঙে ভয়ংকর স্রোতে ভেসে গেছে সাতটি বাড়ি। এখন গোটা এলাকাটি প্রায় ছোট পুকুরের রূপ নিয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা রতন রায় জানালেন, “জল একেবারে তীব্র স্রোতে ঢুকে সব ভাসিয়ে দিয়েছে। ঘর, ধান, গরু— কিছুই বাঁচাতে পারিনি।”
বহু পরিবার এখন বাঁধের উপর ত্রিপল টাঙিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। কষ্টের মধ্যে ছোট ছোট শিশু ও বৃদ্ধদের নিয়ে কোনোভাবে টিকে আছেন দুর্গতরা। প্রশাসনের তরফে ত্রাণসামগ্রী ও শুকনো খাবার বিলি চলছে, পাশাপাশি কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও পাশে দাঁড়িয়েছে।
একজন গৃহবধূ সীমা বর্মন কণ্ঠরোধে বললেন, “বাড়িঘর গেছে, বাচ্চাদের নিয়ে এই বাঁধেই থাকছি। রাতে ঠান্ডায় কাঁপে সবাই, কিন্তু যাব কোথায়?”
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অস্থায়ী রাস্তা তৈরি ও বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। তবে এলাকাবাসীর দাবি— শুধু অস্থায়ী নয়, দ্রুত স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন।
এক পঞ্চায়েত সদস্য মাধব সরকার বলেন, “বাঁধ মেরামত না হলে এই বিপর্যয় বারবার ফিরে আসবে। সরকারকে এবার স্থায়ী প্রতিরোধ গড়তেই হবে।”
অন্যদিকে ময়নাগুড়ির বিডিও অফিস সূত্রে খবর, ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক হিসাব তৈরি করা হচ্ছে এবং পুনর্বাসন সংক্রান্ত পদক্ষেপও বিবেচনায় রয়েছে।