IPL 2025 : অবশেষে লখনউয়ের বিরুদ্ধে জয় পেল চেন্নাই

স্পোর্টস ডেস্ক : চেন্নাই সুপার কিংস বনাম লখনউ সুপার জায়ান্টস—একটি সাধারণ আইপিএল ম্যাচের মধ্যে ছিল অস্বাভাবিক কিছু, ছিল সময়ের সঙ্গে চলা নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব, শিখন এবং শিক্ষা। একদিকে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি, বয়স ৪২ পেরিয়েছে, যিনি ক্রিকেট থেকে ধীরে ধীরে নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছেন, অন্যদিকে ঋষভ পন্থ, সদ্য ফিরে আসা ভয়ানক দুর্ঘটনার পর, যাঁর হাতে ভারতের ভবিষ্যতের দায়িত্ব।

প্রথমে ব্যাট করতে নেমে লখনউ সুপার জায়ান্টস মাঝারি স্কোর তোলে—১৬৬/৭। এর পেছনে বড় অবদান পন্থের ৪৯ বলে ৬৩ রানের ইনিংস। যেখানে পন্থ বেছে নিয়েছেন পরিণত ব্যাটিংয়ের পথ। আগের ম্যাচের মতো ওপরে নেমে হঠাৎ হঠাৎ ঝুঁকি না নিয়ে, পরিস্থিতি বুঝে তিনি ইনিংস গড়েছেন। মন্থর পিচে এ ইনিংস প্রমাণ করে, পন্থ শিখেছেন— শুধু স্ট্রাইক রেট নয়, দরকার পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যাটিং কৌশল।

তাঁর ইনিংসের অন্যতম মুহূর্ত ছিল পাথিরানার বলে ধোনির স্বাক্ষর ‘হেলিকপ্টার শট’ খেলাটা। ক্রিকেটবিশ্ব দেখে নিয়েছে, নতুন ভারত ধোনির শেখানো পথে হেঁটেই নিজস্ব ছাপ রাখছে।

চেন্নাইয়ের বোলিং ইউনিট এদিন ছিল পরিকল্পিত। শুরুতে খলিল, মাঝে জাডেজা ও নুর আহমেদ—আর পেছনে ধোনির অভিজ্ঞ নেতৃত্ব। স্টাম্পিং, রানআউট, ক্যাচ—সব জায়গায় তাঁর পরিণত সিদ্ধান্ত ও ক্ষিপ্রতা স্পষ্ট। যদিও তিনি অফিসিয়ালি অধিনায়ক নন, তবু মাঠে তাঁর উপস্থিতি ও নেতৃত্ব কৌশলগত সাফল্যের অন্যতম কারণ।

কম্বোজের ডিআরএস নেওয়া হোক বা ধীর গতির ওভার পরিচালনা, ধোনির মাইন্ড গেম এই ম্যাচেও প্রভাব বিস্তার করে।

জবাবে চেন্নাই ব্যাট করতে নেমে শুরুটা দুর্দান্ত করে। রাচিন ও শেখ রশিদ পাওয়ার প্লে-তে রান তোলে দ্রুত। তবে মিডল অর্ডারে হোঁচট খায় দল। তখনই মাঠে নামেন ‘ফিনিশার’ ধোনি—যাঁর এক হাতে মারা ছক্কাটি স্মরণ করিয়ে দেয় সেই ২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনালকেও।

টসে দুই উইকেটকিপার-ক্যাপ্টেনের বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ যেমন মানবিক মুহূর্ত ছিল, তেমনই ম্যাচ চলাকালীন একে অন্যের প্রতি সম্মান ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল নিঃশব্দ বার্তা—“আমি ছিলাম, তুমি হচ্ছো”।

পন্থের শেখা, ধোনির শেখানো—এই ম্যাচ ক্রিকেটের ধারাবাহিকতার এক নিদর্শন। একজন ক্যারিশমাটিক নেতার সঙ্গে ভবিষ্যতের আশার আলো—এই দ্বৈরথ ম্যাচের স্কোরবোর্ডের বাইরেও দাগ রেখে গেল অনেক বড় প্রশ্ন ও উত্তর।

এই ম্যাচ শুধু চেন্নাই বনাম লখনউ নয়, এটি ছিল প্রজন্মান্তরের এক ক্রসওভার। পন্থ দেখালেন তিনি শিখেছেন, ধোনি প্রমাণ করলেন তিনি এখনও শেখাচ্ছেন। মাঠে এবং মাঠের বাইরেও, এই ম্যাচ ভবিষ্যতের ক্রিকেটকে দিশা দেখিয়ে গেল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *