স্পোর্টস ডেস্ক : ঘরের মাঠে অধিনায়ক হিসেবে ‘ফিরলেন’ মহেন্দ্র সিংহ ধোনি, কিন্তু প্রত্যাবর্তনটা যেন দুঃস্বপ্ন। আইপিএল ইতিহাসে ঘরের মাঠে সবচেয়ে কম রানে অলআউট হয়ে চেন্নাই সুপার কিংস দলটি কার্যত আত্মসমর্পণ করল কলকাতা নাইট রাইডার্স-এর সামনে। জয়ের জন্য যেমন লড়াই প্রয়োজন, তেমন ইচ্ছেও দেখা গেল না ধোনিদের মধ্যে।
চলতি মরসুমে চেন্নাইয়ের হালচাল আগেই প্রশ্ন তুলে দিয়েছিল। ব্যাটিং হোক কিংবা বোলিং— কোনও বিভাগেই নেই ধারাবাহিকতা। আর কেকেআরের বিরুদ্ধে সেই দুর্বলতাই ফুটে উঠল প্রকটভাবে। শুরু থেকে শেষ অবধি ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ছিল অজিঙ্ক রাহানে নেতৃত্বাধীন কলকাতার হাতে।
ধোনি কোথায়? প্রশ্ন উঠল বারবার
চেন্নাইয়ের ইনিংস যখন একের পর এক উইকেট হারিয়ে ধসে পড়ছে, তখন সবাই তাকিয়ে ছিলেন ধোনির দিকে। কিন্তু তিনি নেমেছেন ন’নম্বরে! পরিস্থিতির গুরুত্ব না বুঝেই যেন ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার দীপক হুডাকে আগেই নামানো হল। মাত্র চার বল খেলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন ধোনি। তাঁর ব্যাটে আগুন নেই, মুখেও লড়াইয়ের ছাপ নেই— এমনটাই মন্তব্য করলেন অনেক ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ।
কেকেআরের ‘স্পিন ওয়েব’ ছিন্নভিন্ন করল চেন্নাইকে
ঘরের মাঠ হলেও উইকেট স্পিনারদের অনুকূল, বুঝেই রাহানে স্পেনসার জনসনের পরিবর্তে নামালেন মইন আলিকে। দ্বিতীয় ওভারে কনওয়েকে ফিরিয়ে সূচনা দেন মইন। তারপর শুরু হল চেন্নাইয়ের পতন। রাচিন রবীন্দ্র আবারও ব্যর্থ। বিজয় শঙ্কর, রাহুল ত্রিপাঠীরা কিছুটা লড়ার চেষ্টা করলেও কার্যত ছিলেন অপ্রস্তুত। কেকেআরের স্পিন ত্রয়ী মইন, নারাইন ও বরুণ চক্রবর্তী ১২ ওভারে ৫৫ রান দিয়ে তুলে নেন ৬টি উইকেট। পেসার হর্ষিত রানাও ছিলেন অনবদ্য।
দলে নেই ভরসাযোগ্য কেউ
রুতুরাজ গায়কোয়াড় ছিটকে গেছেন আগেই। শিবম দুবে এবার নিজের ছায়া হয়ে রয়েছেন। জাডেজা-অশ্বিনের ব্যাটেও নেই ধার। এই অবস্থায় সমর্থকরা ভরসা করেছিলেন একমাত্র ধোনির ওপর। কিন্তু সেই ভরসাও ভেঙে দিলেন তিনি নিজের ব্যাটিং পজিশন দিয়ে।
চেন্নাইয়ের এই পরাজয় শুধুই এক ম্যাচে হার নয়, এটা এক সময়ের অপ্রতিরোধ্য দলের ‘কিংবদন্তি’র বিদায়ের ঘণ্টা— এমনই মনে করছেন ক্রিকেট মহল।
শেষ অবধি সমর্থকদের মুখে হাসির বদলে ছিল হতাশা, ঘরের মাঠে নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে লজ্জাজনক ব্যাটিংয়ে নাম লিখিয়ে ধোনির চেন্নাই কার্যত ছিটকে পড়ল সম্মানের লড়াই থেকেও।