জলপাইগুড়িতে নৃ*শং*স খু*নের ঘটনায় দোষীর ফাঁ*সির সাজা; রায় শুনে খুশি পরিবার

জলপাইগুড়ি: প্রেমে বাধা দেওয়াই কাল হল দাদা শঙ্কর দাসের জন্য। ভাই সুরেশ রায় প্রেমে ব্যর্থ হয়ে প্রতিশোধ নিতে ১৮ বার ধারালো অস্ত্রের আঘাতে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করল নিজের দাদাকে।

এই মামলাকে বিরলতম আখ্যা দিয়ে শনিবার অ্যাডিশনাল থার্ড কোর্টের বিচারক বিপ্লব রায় সুরেশ রায়কে ফাঁসির সাজা শুনিয়েছে বলে জানিয়েছেন সরকার পক্ষের আইনজীবী শুভঙ্কর চন্দ। বিচারকের রায়ে খুশি নিহতের পরিবার।

ঘটনার পেছনে ২০২১ সালের ৪ মার্চের সেই রক্তাক্ত সকাল। জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ ব্লকের ভক্তিনগর থানার শান্তিনগর এলাকায় ঘটে এই ভয়াবহ ঘটনা। জানা গেছে, দাদা শঙ্কর দাস ভাইয়ের প্রেমের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। সেই প্রেমিকা পরবর্তীতে অন্যত্র বিয়ে করে ফেলেন। আর এই ঘটনা মেনে নিতে পারেনি সুরেশ। সকালে এক চায়ের দোকানে চা পান করতে এসেছিলেন পেশায় রাজমিস্ত্রি শঙ্কর দাস। সেই সময় কিছু বুঝে ওঠার আগেই হঠাৎ পিছন থেকে ছুরি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁর ভাই সুরেশ! একের পর এক ১৮টি ছুরির আঘাতে রক্তাক্ত হয়ে লুটিয়ে পড়েন শঙ্কর।

নৃশংসতার মাত্রা এমন ছিল যে, ১৮ বার কোপ মেরে হৃদপিণ্ড, লিভার, কিডনি ছিন্নভিন্ন করে দেয় অভিযুক্ত। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।

প্রায় তিন বছর ধরে মামলাটি চলার পর অবশেষে শনিবার আদালত দোষী সাব্যস্ত করে সুরেশকে ফাঁসির সাজা ঘোষণা করে। রায় ঘোষণার পর আদালত চত্বরে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন মৃত শঙ্করের পরিবার ও বন্ধুরা।

সরকার পক্ষের আইনজীবী শুভঙ্কর চন্দ বলেন,
“এই রায় ন্যায়বিচারের নজির হয়ে থাকবে। এটি বিরলতম অপরাধের মধ্যে পড়ে। মোট ১২ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছিল। বিচারক অপরাধের ভয়াবহতা বিচার করেই সর্বোচ্চ সাজা ঘোষণা করেছেন।”

মৃতের দাদা তাপস দাস বলেন, “আমরা তিন বছর ধরে অপেক্ষা করছিলাম। আজ আমার ভাইয়ের আত্মা শান্তি পাবে।”

প্রণব কুমার দাস, শঙ্করের বন্ধু বলেন,
“এই রায় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। দোষীর উপযুক্ত শাস্তিই হওয়া উচিত। আমরা খুশি।”

এই ঘটনার পর বিচারব্যবস্থার উপর ভরসা রেখে খুশি মৃতের পরিবার। তবে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, সেই দাবি তুলেছেন স্থানীয়রা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *