জলপাইগুড়ি, ২ আগস্ট : সাঁকোয়াঝোড়া আংড়াভাষায় ঘটে যাওয়া চাঞ্চল্যকর খুনের মামলায় ফাঁসির সাজা রদ করে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চ। অভিযুক্ত আফতাব আলমের আবেদনের ভিত্তিতে এই রায় ঘোষণা করেন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য ও বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ। বিষয়টি নিশ্চিত করেন সহকারী সরকারি আইনজীবী অদিতি শঙ্কর চক্রবর্তী।

ঘটনার সূত্রপাত ২০২৩ সালে। ধুপগুড়ির সাঁকোয়াঝোড়া আংড়াভাষা এলাকায় নিহত হন মেহতাব আনসারী। অভিযুক্ত আফতাব আলম সম্পর্কে ওই ব্যক্তির ভাগ্নে। অভিযোগ, দিল্লি থেকে পাঁচ বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে ধুপগুড়িতে আসে আফতাব। ডাকাতির উদ্দেশ্যে তারা ঢুকে পড়ে মেহতাব আনসারীর বাড়িতে। সংঘর্ষ বাধে এবং মৃত্যু হয় মেহতাবের। কোনক্রমে পালিয়ে যান তার স্ত্রী ও দুই সন্তান।
পাড়া-প্রতিবেশীরা সাহসিকতার সঙ্গে আফতাব ও তার সঙ্গীদের ধরে ফেলে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। ঘটনার পর মামলা গড়ায় আদালতে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আফতাবকে ফাঁসির সাজা শোনায় জেলা আদালত। তবে অভিযুক্তের পাঁচ বন্ধু নাবালক হওয়ায় তাদের বিচারের প্রক্রিয়া আলাদা, যা এখনও চলছে জুভেনাইল কোর্টে।
এরপর অভিযুক্ত হাইকোর্টে আপিল করেন সাজা হ্রাসের আবেদন জানিয়ে। শুক্রবার সেই মামলার শুনানিতে আদালত ফাঁসির পরিবর্তে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়। অভিযুক্তের আইনজীবী অর্জুন চৌধুরী জানান, “আদালত বিষয়টি নতুন করে খতিয়ে দেখে মানবিক দিক বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
এই রায় ঘিরে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। কেউ বলছেন, ন্যায়বিচার মিলেছে; কেউ আবার এই সাজা পর্যাপ্ত নয় বলে মনে করছেন। তবে আইনি প্রক্রিয়ায় এটি বড় এক মোড় বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।